নানা সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস হয়েছে, এই অডিও আবার তোলা হয়েছে নিলামেও।
সম্প্রতি ইন্টারনেট জগতে অবৈধ কর্মকাণ্ডের মার্কেটপ্লেস ডার্ক ওয়েবে ওই অডিও নিলামে তোলা হয় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের দলের নেতা ফাওয়াদ জানান, ১১৫ ঘণ্টার অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। ডার্ক ওয়েবে নিলামকারী এর দাম চাইছেন ৩৬ কোটি সাড়ে ৭ লাখ টাকার মতো।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় যে নিরাপদ না, তা এতেই বোঝা যায়। অডিও শুনলেই তো বোঝা যায়, সব সিদ্ধান্ত আসছে লন্ডন থেকে।’
প্রধানমন্ত্রীর কথোপকথনের অডিও ফাঁসের ঘটনা দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যর্থতার কারণে হয়েছে বলে মনে করেন এই নেতা।
জিও টিভি বলছে, ফাঁস হওয়া অডিওতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে পাকিস্তান মুসলিম লীগের (নওয়াজ) মরিয়ম নওয়াজ শরিফ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, আইনমন্ত্রী আজম তারার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ কয়েকজনের কণ্ঠ শোনা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে ওই অডিওর খণ্ডিত অংশ। একটিতে মরিয়মের সঙ্গে ভারত থেকে পাওয়ার প্ল্যান্ট আনার ব্যাপারে কথা বলছিলেন শাহবাজ শরিফ। আরেকটি অডিওতে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ নিয়ে মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায় তাকে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অডিও ফাঁসের বিষয়টি জানেন। এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ফাঁস হওয়া অডিওর তদন্তে সব সংস্থার উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা থাকবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিক ছিল কি না, তা তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।’
মন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেন, ‘স্বাচ্ছন্দ্যে বলতে পারি, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সব কথোপকথন রেকর্ড করে প্রকাশ করা হলেও তাতে বিব্রতকর কিছু থাকবে না।’
বিভিন্ন নাটকীয়তার পর গত ৯ এপ্রিল মধ্যরাতের অনাস্থা ভোটে ৬৯ বছর বয়সী ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্বের অবসান ঘটে। তিনি দেশটির ২২তম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। পরে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে আবার ভোটাভুটিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ নেতা শাহবাজ শরিফ।
দুর্নীতির দায়ে নওয়াজ শরিফ অভিশংসিত হওয়ার পর ২০১৮ সালে চার দলের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ইমরান। তার সরকারের মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত।
শাহবাজ শরিফ ক্ষমতায় এসেই রাজনীতি-অর্থনীতিসহ নানা সংকটে ইরমান খানকে দায়ী করেছেন। দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে ইমরানকে। তিনিও সংকটে শাহবাজকে দায়ী করে তার পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন করছেন।