ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়াকে শাস্তি দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আহ্বান জানান তিনি।
সেই সঙ্গে রাশিয়াকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে হামলা করে মস্কো অপরাধ করেছে। আমরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। মস্কোকে শাস্তি পেতেই হবে।’
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় বুধবার ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ৩ লাখ রিজার্ভ সেনাকে সীমান্ত পেরিয়ে ইউক্রেনে প্রবেশ করার নির্দেশ দেয়ার ঘণ্টাখানেক পরে জাতিসংঘে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কিয়েভে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পাঁচ দফা পরিকল্পনা ছিল, যার মধ্যে মস্কোর আগ্রাসনের জন্য শুধু শাস্তিই নয়, সেই সঙ্গে ইউক্রেনের নিরাপত্তা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা পুনরুদ্ধার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিধানও ছিল।’
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়ে রাশিয়া যে অপরাধ করেছে তার শাস্তি চাই। সীমানা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘনের জন্যও তাদের শাস্তি পেতে হবে।’
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর একত্রিত বিশ্বের নেতাদের উদ্দেশ্যে জেলেনস্কি বুধবার প্রথমবারের মতো ভাষণ দেন।
তার বক্তৃতা শেষে বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি তাদের আসন থেকে উঠে হাততালি দিয়ে জেলেনস্কিকে সাধুবাদ জানান। এ সময় রাশিয়ার প্রতিনিধিরা তাদের আসনে বসেছিলেন।
জাতিসংঘে ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কিও উপস্থিত ছিলেন। তিনি অন্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে স্বামীকে সাধুবাদ জানান।
আলোচনার কথা বলেও মস্কোর ইউক্রেনে সেনা প্রবেশের ঘোষণায় তিরস্কার করেন জেলেনস্কি। বলেন, ‘মস্কো আলোচনার কথা বলে আবার সেনাদের একত্রিত করে ইউক্রেনে প্রবেশ করতে নির্দেশও দেয়। তারা আলোচনার কথা বলে আবার ইউক্রেনের অধীকৃত অঞ্চলে ছদ্ম গণভোটের ঘোষণা দেয়।’
রাশিয়া চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ করে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের আগে রেকর্ড করা বক্তব্য বুধবার দেশটির এক টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। বক্তব্যে ৩ লাখ রিজার্ভে থাকা সেনাকে ইউক্রেন সীমান্তে প্রবেশের ঘোষণা দেন পুতিন। পুতিনের ঘোষণা এমন সময় এলো যখন দনবাস অঞ্চলের রুশ স্বীকৃত কর্তৃপক্ষ চলতি মাসেই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে গণভোটের আয়োজন করতে যাচ্ছে। আগামী ২৩-২৭ সেপ্টেম্বর এই ভোট হবে।ফেব্রুয়ারিতে এই দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। তবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এখনও তাদের ইউক্রেনের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। ২০১৪ সালে এই দুটি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারায় ইউক্রেন। সে সময় স্থানীয় জনগণ পশ্চিমা-সমর্থিত ‘ময়দান অভ্যুত্থানের’ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিল।