এশিয়া কাপের ভারত-পাকিস্তানের গ্রুপ পর্বের এক ম্যাচকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্যের লেস্টার শহরে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে চলতে থাকা উসকানি ও সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন উভয় সম্প্রদায়ের কমিউনিটির নেতারা ও স্থানীয় রাজনীতিবিদরা।
মঙ্গলবার সকালে একটি মসজিদের সিঁড়িতে জড়ো হন হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা।
লেস্টার শহরের ইসকন হিন্দু মন্দিরের সভাপতি প্রদীপ গজ্জার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন যে উত্তেজনা ও সহিংসতার উদগীরণ দেখে তারা দুঃখিত এবং তাদের হৃদয় ভেঙে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘নিরপরাধ ব্যক্তিদের ওপর শারীরিক আক্রমণ এবং সম্পত্তির অযৌক্তিক ক্ষতি কোনো সভ্য সমাজের অংশ নয় এবং প্রকৃতপক্ষে আমাদের বিশ্বাসেরও অংশ নয়।’
টাইমস রেডিওর সাক্ষাৎকারে লেস্টার শহরের বিরোধী লেবার এমপি জোনাথন অ্যাশওয়ার্থ সহিংসতার ঘটনার নিন্দা করে একে অগ্রহণযোগ্য বলেছেন।
সোমবার এক টুইট বার্তায় জোনাথন সবাইকে শান্ত, শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধনে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
২৮ আগস্ট ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট খেলা নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা সাম্প্রদায়িক সংঘাতে রূপ নিয়েছিল যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের উত্তর-পশ্চিমের লেস্টার শহরে। যদিও এ শহরে হিন্দু-মুসলিমের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।
সাম্প্রদায়িক সংঘাত ঠেকাতে লিসেস্টার শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে
সংঘাত এমন অবস্থায় চলে যায় যে পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহরের বাইরে থেকে বাড়তি পুলিশ নিয়ে আসতে হয়েছিল।
লেস্টার পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, গত ২৮ আগস্ট এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারত-পাকিস্তানের খেলা নিয়ে এই চলমান সংঘাতের সূত্রপাত।
গত শনি ও রোববারও শহরের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত হয়েছে।
এরই মধ্যে সহিংসতা ও ক্ষয়ক্ষতির বেশ কিছু ঘটনা পুলিশকে জানানো হয়েছে এবং ঘটনাগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
লেস্টার পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, শহরে হিংসা বা বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না।
সোমবার সাম্প্রদায়িক এই সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কিছু মানুষ জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে দিতে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়া উপাসনালয় আক্রান্ত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
পুলিশের অস্থায়ী প্রধান কনস্টেবল রব নিক্সন বলেছেন, ‘পূর্ব লিসেস্টার এলাকার বেশ কিছু অংশে বিশৃঙ্খলার অসংখ্য খবর পাওয়া গেছে। আমরা সেখানে অফিসার পেয়েছি, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছি, সেখানে আরও অফিসার যাচ্ছে, যাদের জনসমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।’
লেস্টার হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এই বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক ও বিকৃত তথ্যের প্রচারককেই দায়ী করেছেন শহরের মেয়র পিটার সোলসবি।
বিবিসির একটি রেডিও প্রোগ্রামে তিনি বলেছেন, ‘আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কিছু কনটেন্ট দেখেছি, যা এখন খুব, খুব, খুব বিকৃত এবং এর মধ্যে কিছু সম্পূর্ণভাবে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ঘটনা সম্পর্কে মিথ্যা বলছে।’