বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে চলমান সশস্ত্র সংঘাত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হওয়া সম্ভব বলে মনে করে না ক্রেমলিন।
ইন্টারফ্যাক্সের বরাতে রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার এমনটাই বলেছেন।
কোনো কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন-রাশিয়ার মীমাংসার পথ আছে কি না জানতে চাইলে পেসকভ বলেন, ‘এই মুহূর্তে এই ধরনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।’
এর আগে দুই দেশের শান্তি আলোচনা স্থগিত করার জন্য কিয়েভের ওপর দায় চাপিয়েছে মস্কো।
ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ
মার্চের শেষ দিকে, দুই দেশই খসড়া শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছিল, যা ইউক্রেনকে প্রধান বিশ্বশক্তিগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিনিময়ে একটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করবে।
এপ্রিলে ইউক্রেনীয় সরকার রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে আলোচনা বন্ধ করে দেয়। যদিও কিয়েভের অভিযোগকে মস্কো মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি সে সময় ঘোষণা করেছিলেন, তার দেশ কেবল যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে পরাজিত করে ইউক্রেনের দখল করা সব অঞ্চল থেকে রুশ বাহিনীকে সরিয়ে দিয়ে সন্তুষ্ট হবে। এর মধ্যে ক্রিমিয়াও রয়েছে।
ক্রিমিয়া হলো সাবেক ইউক্রেনীয় অঞ্চল। ২০১৪ সালে তা রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। মস্কো ক্রিমিয়াকে তার সার্বভৌমত্বের অধীনে বলে মনে করে এবং এর অবস্থান আলোচনার বিষয় নয়।
সেনা প্রহরায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি
এদিকে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মার্চ মাসে ইস্তাম্বুল আলোচনার সময় রাশিয়া ইউক্রেনের প্রস্তাবের নিরাপত্তা গ্যারান্টিতে সম্মত হতে প্রস্তুত ছিল। কিয়েভই সেই আলোচনা বাতিল করে।
তিনি বলেন, ‘এই চুক্তিতে পৌঁছানোর শর্ত তৈরি করার জন্য কিয়েভ থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এর পরিবর্তে, কিয়েভ কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে সব চুক্তি পরিত্যাগ করে।’
পুতিন এ সম্পর্কে আরও বলেন, ‘তারা ঘোষণা করেছিল যে তারা রাশিয়ার সঙ্গে কোনো চুক্তি চাইবে না, তবে যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয় চাইবে। ভালো, তারা সেটাই করে দেখাক।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
একই সঙ্গে পুতিন বলেছেন, তার ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির মধ্যে আলোচনা অনিশ্চিত।
এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রথমত তাদের (আলোচনার জন্য) সম্মত হওয়া উচিত। কিন্তু তারা তা করতে রাজি নয়। জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি প্রস্তুত নন এবং রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছুক নন। তিনি যদি প্রস্তুত না হন, (আলোচনার) কোনো প্রয়োজন নেই।’
তারা ঘোষণা করেছিল যে তারা রাশিয়ার সঙ্গে কোনো চুক্তি চাইবে না, তবে যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয় চাইবে। ভালো, তারা সেটাই করে দেখাক।
এদিকে রাশিয়ান ফেডারেশনে যোগ দিতে গণভোটের আয়োজন করতে যাচ্ছে রাশিয়া স্বীকৃত স্বাধীন দনবাস প্রজাতন্ত্রের নেতারা। মঙ্গলবার তারা দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিএলপি) ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) অঞ্চলে ভোটের তারিখ ঠিক করেন। জানায়, আগামী ২৩-২৭ সেপ্টেম্বর এই ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
ইউক্রেনের দাবি, পরাজয় দেখতে পেয়েই তড়িঘড়ি করে গণভোট আয়োজন করতে যাচ্ছে মস্কো।