বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে উত্তাল ইরান, নিহত ৫

  •    
  • ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৫:০৭

কুর্দি নারী মাহসা আমিনিকে ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের নৈতিকতা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব করেননি। পুলিশ হেফাজতে মাহসার হার্ট অ্যাটাক হয়, পরে তিনি মারা যান। এ ঘটনার পর থেকে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ইরান।

‘সঠিক নিয়মে’ হিজাব না পরার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর ২২ বছরের মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ইরান। তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গত কয়েক দিনে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।

মাহসার মৃত্যুর পর চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত পাঁচ জন

নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে এই বিক্ষোভে নারীদের পাশাপাশি ইরানি পুরুষও যোগ দিয়েছেন। রাস্তায় প্রতিবাদের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক নারী নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী পোশাক পরার ঘোষণা দিয়ে ভিডিও পোস্ট করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ-বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। রাজধানী তেহরানে আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়, শহীদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয় ও তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদে সমাবেশ করেছেন।

নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে উত্তাল ইরান

কুর্দি নারী মাহসা আমিনিকে ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের নৈতিকতা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব করেননি।

পুলিশ হেফাজতে থাকার সময়েই মাহসার হার্ট অ্যাটাক হয়, এরপর তিনি কোমায় চলে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার তার মৃত্যু হয়। পুলিশ মাহসাকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরিবারের অভিযোগ গ্রেপ্তারের পর তাকে পেটানো হয়।

মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তাল ইরান। ফেসবুক ও টুইটারে #mahsaamini এবং #Mahsa_Amini হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে চলছে প্রতিবাদ। ইরানের বিভিন্ন জায়গায় নারীর পোশাকের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষও চলছে।

ইরানের পশ্চিমাঞ্চলের কুর্দিস্তান প্রদেশের দিভান্দারেহতে সোমবারও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘাত হয়

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী বাহিনীর (আইআরজিসি) আধাসামরিক বাহিনী বাসিজের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

মাহসা আমিনিকে নিয়ে প্রতিবেদন গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম

কিছু ফুটেজে দেখা যায়, ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী সানন্দাজ শহরে বিক্ষোভে ইরানের বাধ্যতামূলক হিজাব আইনের প্রতিবাদে অনেক নারী তাদের মাথার স্কার্ফ খুলে ফেলেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ‘খামিনির মৃত্যু’ বলে স্লোগান দিতে শোনা গেছে।

আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনি হলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা।

Western image of HijabvsReality of Hijab in islamic countries.#Mahsa_Amini #مهسا_امینی pic.twitter.com/77qCq2YbIK

— مَـنـیـک (@callmemaniic) September 17, 2022

প্রাগভিত্তিক রেডিও ফারদা জানিয়েছে, কুর্দি অধ্যুষিত দিভান্দারেহেতে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী গুলি ছুড়লে আহত হন ৮ জন।

মাহসাকে দাফনের সময়ও বিক্ষোভকারী গভর্নর ভবনের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।

নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে ইরানে চলছে টানা বিক্ষোভ

এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তেহরানের পুলিশ কমান্ডার হোসেন রাহিমি বলেন, আমিনিকে নৈতিকতা পুলিশ বাধা দিয়েছে, কারণ তার হিজাব অনুপযুক্ত ছিল। সংবাদ সম্মেলনে আমিনিকে পুলিশের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন হোসেন রাহিমি।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মাহসা আমিনির মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া দেশটির নৈতিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্নেল আহমেদ মিরজাইকে বরখাস্ত করা হয়েছে

ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পরই নারীদের জন্য হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়। ইরানের ধর্মীয় শাসকদের কাছে নারীদের জন্য এটি ‘অতিক্রম-অযোগ্য সীমারেখা’। বাধ্যতামূলক এই পোশাকবিধি মুসলিম নারীসহ ইরানের সব জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মের নারীদের জন্য প্রযোজ্য।

এই পোশাকবিধি অনুযায়ী নারীদের জনসমক্ষে চুল সম্পূর্ণভাবে ঢেকে রাখতে হবে এবং লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে।

তেহরানের রাস্তায় চলছে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ

ইরানি এক সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট মাসিহ আলিনেজাদ তার অফিশিয়াল টুইটারে প্রতিবাদী নারীদের ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘হিজাব পুলিশের হাতে মাহসা আমিনি হত্যার প্রতিবাদে ইরানের নারীরা তাদের চুল কেটে ও হিজাব পুড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। নিজেদের চুল ঢেকে রাখলে আমরা (নারী) স্কুলে যেতে পারব না, চাকরি করতে পারব না। আমরা এই লিঙ্গ বৈষম্যভিত্তিক শাসনে অতিষ্ঠ।’

তিনি আরেক টুইটে বলেন, ‘৭ বছর বয়স থেকে আমরা আমাদের চুল ঢেকে রাখতে বাধ্য। তা না হলে আমরা স্কুলে যেতে পারব না, চাকরি পাব না। আমরা এই লিঙ্গ-বৈষম্যভিত্তিক শাসনের অবসান চাই।’

এ বিভাগের আরো খবর