মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে অর্থ ও অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকাতে সদস্য দেশগুলোর আরও বেশি কিছু করা উচিত বলে মনে করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় অভিযোগ করেছে, মিয়ানমারের সেনারা তাদের জনগণকে দমন ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে শাসন করছে।
গত বছরের শুরুর দিকে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে সামরিক অভ্যুত্থান করে সে দেশের সশস্ত্র বাহিনী।
অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারের পরিস্থিতি অশান্ত রয়েছে, সেখানে সামরিক বাহিনী ও গণতন্ত্রপন্থিদের মধ্যে সংঘাত চলছে। এরই মধ্যে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে মিয়ানমারের সেনারা।
একের পর এক রায়ে দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সাং সুকিকে কারাদণ্ড দিচ্ছে জান্তা সমর্থিত আদালত।
জাতিসংঘ মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করেছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে আরও বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে এবং বলেছে যে এটি একটি অর্থবহ এবং টেকসই উপায়ে দেশ পরিচালনা করতে ও আর্থিক খাতে গভীর সংকট সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এটি জাতিসংঘের সদস্যদের মিয়ানমারে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সুপারিশ করেছে এবং সামরিক বাহিনীর ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ককে বৈদেশিক মুদ্রায় প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত মিয়ানমারের জনগণকে সমর্থন দেয়া।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর পরও দেশটি প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে এবং বেশ কয়েকটি দেশ জান্তা সরকারকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া মিয়ানমারকে কমব্যাট যুদ্ধবিমান এবং সাঁজোয়া যান সরবরাহ করেছে, চীন যুদ্ধবিমান ও পরিবহন বিমান সরবরাহ করেছে, সার্বিয়া রকেট ও আর্টিলারি শেল সরবরাহ করেছে এবং ভারত একটি দূরবর্তী বিমান প্রতিরক্ষা স্টেশন দেয়ার পাশাপাশি একটি কিলোক্লাস সাবমেরিন দেশটির নৌবাহিনীকে দিয়েছে।
একটি পৃথক বিবৃতিতে, মিয়ানমারবিষয়ক স্বাধীন জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ মেরি ললর এবং টম অ্যান্ড্রুস মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ‘আন্তর্জাতিক উদাসীনতা’ অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন।