বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আমেরিকার নৌবাহিনীর কাছে ‘ইউএফও’র আরও ভিডিও

  •    
  • ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৯:২৩

আমেরিকার নৌবাহিনী বেশকয়েকটি ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে, যেখানে তাদের এমন কিছুর (ইউএফও) মুখোমুখি হতে হয়েছে, যা ব্যাখ্যা করা এখনও সম্ভব হয়নি। এ সংক্রান্ত ৩টি ভিডিও এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। নৌবাহিনী স্বীকার করে নিয়েছে যে তাদের কাছে আরও ইউএফওর ভিডিও আছে কিন্তু প্রতিরক্ষার বিষয়াদি জড়িত থাকায় তা প্রকাশ করতে চায় না তারা।

বেশ কিছু ইউএফওর ভিডিও ধারণ করার বিষয়ে পেন্টাগন স্বীকার করে নিলেও আমেরিকার নৌবাহিনী বলছে, তারা আর নতুন কোনো ইউএফও ভিডিও প্রকাশ করতে চায় না।

ভাইসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নৌবাহিনী এই ধরণের ভিডিও প্রকাশ করা ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ হিসেবে মনে করে।

আমেরিকার সরকারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার সাইট দ্য ব্ল্যাকভল্টকে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী বলেছে, ইউএফওর ভিডিও জনগনের কাছে প্রকাশ হলে তা জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি সৃষ্টি করবে কারণ এটি আমেরিকার প্রতিপক্ষকে প্রতিরক্ষা বিভাগ/নৌবাহিনীর অপারেশন, দুর্বলতা এবং এ সংক্রান্ত মূল্যবান তথ্য প্রদান করতে পারে।

নাইট ভিশন গগলসে ধরা পড়া ত্রিকোণাকার ইউএপি

এর আগে ব্ল্যাকভল্টের পক্ষ থেকে নৌবাহিনীর কাছে থাকা সমস্ত ইউএফওর ভিডিও চাওয়া হয়েছিল।

প্রায় ৩টি ভিডিও এর আগে প্রকাশ পেয়েছে, এই ভিডিওগুলো যে নৌবাহিনীরই ধারণ করা, তা নিশ্চিত করে পেন্টাগন। তবে ভিডিওগুলো সরকারি উপায়ে প্রকাশ করা হয়নি। এগুলো নিউ ইয়র্ক টাইমসের কাছে ফাঁস করা হয়েছিল।

আমেরিকার নৌবাহিনীও স্বীকার করে নিয়েছে যে তাদের কাছে আরও ভিডিও রয়েছে।

পেন্টাগনও ইউএফও ইস্যুতে ইদানিং বেশ কথা বলছে। এই বছরের শুরুতে ইউএফও’র বিষয়ে কংগ্রেসের মুখোমুখিও হয়েছিল।

সামরিক বাহিনী আপাত দৃষ্টিতে জনসাধারণ ও কংগ্রেসকে বলতে চেয়েছে যে ইউএফওগুলো খুবই বাস্তব এবং একটি হুমকি। এ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের তহবিল প্রয়োজন। একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়াদি জড়িত থাকার কারণে নতুন কোনো ভিডিও প্রকাশ করতে চায় না তারা।

নৌবাহিনীর যুদ্ধবিমানের ক্যামেরায় ধরা পড়া ইউএপি

ইউএফও কি?

কয়েক দশক ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ইউএফও দেখার দাবি করেছে, এমনকি এলিয়েনের সঙ্গেও যোগাযোগের দাবি করেছেন অনেকে। সাধারণ মানুষের ধারণা ইউএফও হলো এলিয়েনের মহাকাশযান। দুইটি বিষয়কে সাধারণ মানুষ একসূত্রে গাঁথলেও গবেষকরা একে ভিন্নভাবেই দেখেন।

ইউএফও বলতে বোঝায় এমন কোনো উড়ন্ত বস্তু, যা মানুষের পক্ষে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এটিকে ইদানিং ইউএপি(আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফেনোমেনা) বলা হচ্ছে।

আর এলিয়েন বলতে বোঝায় ভীনগ্রহের প্রাণী। বিজ্ঞান কল্পকাহিনীতেই এই দুটি বিষয়ের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও বাস্তব জীবনে এগুলো অধরাই রয়ে গেছে। তারপরও কিছু কল্পনাপ্রবণ মানুষ বলে এসেছে, এমন কিছু থাকা অস্বাভাবিক নয়।

কংগ্রেসের শুনানিতে যা বলা হয়েছে

মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ইন্টেলিজেন্স কাউন্টার টেররিজম, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স এবং কাউন্টার প্রলিফারেশনের সাবকমিটির শুনানির সময় পেন্টাগনের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা রোনাল্ড মল্টলি বলেছেন, জোরালো বিশ্লেষণের মাধ্যমে কিছু ইউএপি শনাক্ত করা যেতে পারে, তবে সব ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়।

কংগ্রেস শুনানিতে ইউএপির ভিডিও দেখাচ্ছেন নৌ গোয়েন্দা বিভাগের ডেপুটি কমান্ডার স্কট গ্রে

২০০৪ সালে এমন এক ঘটনায় প্রশান্ত মহাসাগরে একটি বিমানবাহী রণতরি থেকে চালিত যুদ্ধবিমানের পাইলটরা এমন এক বস্তুর সম্মুখীন নন, যা থামা ও ঘোরাঘুরির আগের মুহূর্তেই কয়েক হাজার ফুট নিচে নেমে আসে।

অন্য একটি ঘটনায় প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেখানো হয়েছে, ক্যামেরায় একটি বস্তুকে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর যুদ্ধবিমানের পাশ দিয়ে উড়তে দেখা গেছে। যেটিকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের নৌ গোয়েন্দা বিভগের ডেপুটি ডিরেক্টর স্কট ব্রে বলেন, ‘কিছু কিছু ঘটনা আছে যেখানে আমরা ফ্লাইট থেকে প্রাপ্ত ডাটা দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারি না। তারাই আমাদের কাছে সবচেয়ে আগ্রহের বিষয়।’

তবে ইউএপিগুলো ভিনগ্রহী এলিয়েন হতে পারে, এমন ধারণাকে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন স্কট ব্রে। তার মতে, এগুলো জৈব বা অজৈব উপাদান বা ব্যাখ্যাতীত ধ্বংসাবশেষ, যা কখনো উদ্ধার করা হয়নি এবং এই বস্তুগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাও করা হয়নি।

শুনানিতে আইন প্রণেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যেকোনো ব্যাখ্যাতীত এরিয়াল ফেনোমেনা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।

আরকানসাস রিপাবলিকানের আইনপ্রণেতা রিক ক্রফোর্ডের মতে, এটি এলিয়েন মহাকাশযান খোঁজার বিষয় নয়, বরঞ্চ সম্ভাব্য হুমকি শনাক্তে অক্ষমতা গোয়েন্দা ব্যর্থতার সমতুল্য, যা আমরা এড়াতে চাই। তবে গণশুনানির পর আইন প্রণেতাদের জন্য প্রাইভেট ক্লাসিফায়েড সেশনের জন্য দরজা বন্ধ করা হয়।

ইউএপি নিয়ে সাম্প্রতিক ঘটনা শুরু যেভাবে

এর আগে ২০০৪ সাল থেকে বিভিন্ন সময় ইউএফওবিষয়ক ১৪৪টি ঘটনার কথা জানিয়েছিল খোদ পেন্টাগন। ইউএফও দেখার দাবি করেছেন দেশটির বিমান ও নৌসেনারা। ২০২০ সালের এপ্রিলে কিছু ভিডিও প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউএফও হিসেবে অনুমিত বস্তুগুলোর ভিডিও ধারণ করেছিল নৌবাহিনী।

কিছু কিছু ঘটনা আছে যেখানে আমরা ফ্লাইট থেকে প্রাপ্ত ডাটা দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারি না। তারাই আমাদের কাছে সবচেয়ে আগ্রহের বিষয়। এগুলো জৈব বা অজৈব উপাদান বা ব্যাখ্যাতীত ধ্বংসাবশেষ, যা কখনো উদ্ধার করা হয়নি এবং এই বস্তুগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাও করা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে ইউএফওবিষয়ক এ রকম অসংখ্য দাবি জোরালো হতে থাকার মুখে এ বিষয়ে ২০২০-এ ব্যাখ্যা চায় কংগ্রেস। নির্দেশ অনুযায়ী বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ২০২০ সালের আগস্টে আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফেনোমেনা টাস্কফোর্স গঠন করেছিল পেন্টাগন। মে মাসে তারই সর্বশেষ শুনানি হয় কংগ্রেসে।

এ বিভাগের আরো খবর