ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে প্রায় সব দেশের পক্ষ থেকে শোক জানানো হলেও শুরু থেকেই এই বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছে ইরান। এবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক প্রোগ্রামে রানিকে তুলনা করা হয়েছে হিটলারের সঙ্গে। তাকে আখ্যায়িত করা হয়েছে একজন বিখ্যাত সাম্রাজ্যবাদী হিসেবে।
ইরানের রাষ্ট্রপরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল ওয়ান নেটওয়ার্ক’-এ ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে মানবজাতির ইতিহাসে অন্যতম বড় অপরাধী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, এমনকি রানি এলিজাবেথের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে জার্মানির নিন্দিত চ্যান্সেলর ও নাৎসি পার্টির প্রধান এডলফ হিটলারের, এমনটাই বলা হয়েছে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলার ফুয়াদ ইজাদি
ইরানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে রানির মৃত্যুকে বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের জন্য ভালো সংবাদ হিসেবে বলা হয়েছে।
যদিও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রানির মৃত্যু ও রাজা তৃতীয় চার্লসের সিংহাসনে বসা নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে ইরানের মিত্র চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রানির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।
রানি একজন বিখ্যাত সাম্রাজ্যবাদী, ঔপনিবেশিক, যুদ্ধাপরাধী, তার নামে সারা বিশ্বে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী হামলা চালায়।
চ্যানেল ওয়ান নেটওয়ার্কে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলার ফোয়াদ ইজাদি বলেন, ‘সম্ভবত সিংহাসনে ৭০ বছরের আলোকে তাকে (রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ) হিটলারের সঙ্গে একই তালিকায় রাখা উচিত।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির চ্যান্সেলর ছিলেন এডলফ হিটলার। ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যার দায়ে তাকে অভিযুক্ত করা হয়। এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করার জন্যও হিটলারকেই দায়ী করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিকোণ থেকে আমাদের দুঃখিত হওয়া উচিত যে এই ব্যক্তির (রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ) মৃত্যু হয়েছে কোনো বিচার ছাড়াই, শাস্তি না পেয়ে এবং তার অপরাধের দায় শোধ না করেই।
‘রানি একজন বিখ্যাত সাম্রাজ্যবাদী, ঔপনিবেশিক, যুদ্ধাপরাধী, তার নামে সারা বিশ্বে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী হামলা চালায়।’
লন্ডনে রানির কফিন বহনকারী গাড়ি দেখতে রাস্তার দুইধারেই মানুষ
গত বৃহস্পতিবার ৯৬ বছর বয়সে নিজ প্রাসাদ স্কটিশ বালমোরাল দুর্গে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা যান। তিনি ৭০ বছর সিংহাসনে ছিলেন।
সোমবার হতে যাওয়া রানির শেষকৃত্যানুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেক বিশ্বনেতাই। তবে রাশিয়া, বেলারুশ ও মিয়ানমারের নেতাদের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।