রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত চেচেন প্রজাতন্ত্রের নেতা রমজান কাদিরভ, ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চল থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
শনিবার মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে দেয়া ১১ মিনিটের এক ভয়েস বিবৃতিতে অসন্তোষের পাশাপাশি তিনি স্বীকার করে নেন যে লড়াই পরিকল্পনামাফিক চলছে না।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, গত কয়েক দিনে কিয়েভে রুশ হামলা জোরালো হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সামরিক বাহিনীকে ইউক্রেনের খারকিভসহ একাধিক অবস্থান থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কাদিরভ বলেন, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিদের মতো আমি কোনো সমর কৌশলবিদ নই। কিন্তু এটি পরিষ্কার, সেনা নেতৃত্ব কিছু ভুল করেছে।’
একই সঙ্গে তারা (ক্রেমলিনের সেনা কর্মকর্তারা) প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন কাদিরভ।
চেচেন যোদ্ধাদের বিষয়ে কাদিরভ জানিয়েছেন, তারা যুদ্ধক্ষেত্রেই আছে। আরও ১০ হাজার যোদ্ধা সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
কাদিরভ আশা প্রকাশ করেন, খুব শিগগিরই তারা বন্দরনগরী ওডেসাতে পৌঁছাবেন।
যদি চলমান সংঘাতে কৌশলগত কোনো পরিবর্তন না হয়, বিবৃতিতে শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
কাদিরভ বলেন, ‘যদি আজ অথবা কাল বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনায় কোনো পরিবর্তন না আসে, আমি বাধ্য হব নেতৃস্থানীয় (ক্রেমলিনের) ব্যক্তিদের কাছে যেতে তাদের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে।‘
এর আগে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের লক্ষ্য অর্জনে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দোনেৎস্ক অঞ্চলে অভিযান জোরদার করতে বালাক্লেয়া এবং ইজিয়াম এলাকা থেকে সেনাদের ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
রুশ মন্ত্রণালয়ের দাবি, খারকিভের ওই দুই অঞ্চলে অবস্থানরত সেনাদের গত তিন দিন ধরে দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের ভূখণ্ডে ‘পুনরায় মোতায়েন’ করা হয়েছে। অভিযান চলাকালীন এসব সেনা বেশকিছু অনিয়ম করেছিল।
তবে কী ধরনের অনিয়ম হয়েছে, তা প্রকাশ করেনি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, খারকিভের ইউক্রেনীয় ইউনিটগুলোতে শক্তিশালী কামান, মিসাইল এবং বিমান হামলা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।
খারকিভ অঞ্চল থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের ঘটনাকে সাফল্য হিসেবে দেখছে ইউক্রেন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তীব্র প্রতিরোধের মুখে রুশ সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি শনিবার রাতে দেয়া এক ভিডিও ভাষণে রাশিয়ার সেনাদের হাত থেকে ২ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চল পুনরায় দখল করার বিষয়টি জানিয়েছেন।
যদি আজ অথবা কাল বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনায় কোনো পরিবর্তন না আসে, আমি বাধ্য হব নেতৃস্থানীয় (ক্রেমলিনের) ব্যক্তিদের কাছে যেতে তাদের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।