৯৬ বছরের জীবনে যার ৭০ বছরই কেটেছে রাজ সিংহাসনে, সেই রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবনযাত্রায় ছিল বহু নিয়মের বাধ্যবাধকতা। পোশাক থেকে খাওয়া-দাওয়া; সবকিছুতে স্বাভাবিকভাবেই ছিল আভিজাত্য।
দীর্ঘ জীবনে তিনি মেনে চলেছেন কঠোর খাদ্যাভ্যাস। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শে এসেছে খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন। মুখরোচক অনেক কিছু নিয়ে তেমন বাধার মুখে না পড়লেও ঐতিহ্যগতভাবেই একটি খাবারে কার্যত ‘নিষেধাজ্ঞা’ ছিল তার।
দ্য সানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্যান্ডউইচের আকার সাধারণত ত্রিকোণাকার হলেও রানি এলিজাবেথ খেতেন চারকোনা আকৃতির স্যান্ডউইচ। একই সঙ্গে সবসময় তার জন্য রাখা হতো একই আকারে আলু।
ক্রিকোণাকার স্যান্ডউইচ না খাওয়ার পেছনে আছে এক ঐতিহাসিক গল্প। রানি ভিক্টোরিয়ার স্বামী প্রিন্স অ্যালবার্ট ভাবতেন, এই আকৃতির স্যান্ডউইচ কফিনের মতো দেখতে, যা অশুভ ইঙ্গিত বহন করে থাকে।
রাজপরিবারের জন্য স্যান্ডউইচ তৈরি করার বিশেষ উপায় নিয়ে রাজকীয় শেফ গ্রাহাম নিউবোল্ড জানান, রানি এবং তার পরিবার তাদের রুটি অত্যন্ত পাতলা টুকরা টুকরা করে খান। তবে একটি ধাপ রয়েছে, যা আরও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আপনি যদি রানিকে এমন কিছু পরিবেশন করেন যার ওপর একটি বিন্দু ছিল, তবে এর অর্থ হলো আপনিই সিংহাসন উৎখাত করার চেষ্টা করছেন।
সাবেক রাজকীয় শেফ ড্যারেন ম্যাকগ্র্যাডি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, রানি এলিজাবেথ সালমন বা শসার স্যান্ডউইচ পছন্দ করতেন। তিনি জানান, সকালে চায়ের সঙ্গে মাখন দেয়া ছোট ছোট কেক খেতেন রানি। প্রাতরাশে অধিকাংশ দিনই থাকত তাজা ফল। এ ছাড়াও সসেজ খেতেন আগ্রহ নিয়ে।
ম্যাকগ্র্যাডি বলেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রানির খাদ্যাভ্যা কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন চিকিৎসকরা। সেটা সসেজের ওপরে এসেছিল। চিকিৎসকদের সেই বারণ শোনেননি তিনি। আমাকে ডেকে সসেজ নিয়ে আসতে বলেন। রানির স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই কম তেলে সসেজ ভেজে দিয়েছিলাম।
তিনি জানান, তাজা সবজির তৈরি তরকারি খেতেও খুবই ভালোবাসতেন রানি। পাশাপাশি, খুবই সংযমী জীবন যাপন করতেন তিনি।
বৃহস্পতিবার স্কটল্যান্ডের বালমোরাল দুর্গে যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি সময় সিংহাসনে থাকা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু হয়। নতুন দায়িত্বে এসেছেন রানির জ্যেষ্ঠ ছেলে, তার উত্তরসূরি রাজা ৭৩ বছর বয়সী চার্লস।