সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারতের প্রথম যুদ্ধবিমানবাহী রণতরি ‘আইএনএস বিক্রান্ত’ আজ যুক্ত হচ্ছে দেশটির নৌবাহিনীতে।
কেরালা রাজ্যের কোচি বন্দরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় রণতরিটিকে নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত করবেন। এতে অন্তত ৩০টি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টর উড্ডয়ন করতে পারবে।
এর আগে, গত বছরের ২৫ জুন সব বাধা পেরিয়ে সমুদ্রে নামে দেশটির প্রথম এয়ারক্রাফট কেরিয়ার ‘আইএনএস বিক্রান্ত’।
পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ৩০ বছর আগে। কাজ শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। তারপর নানা কারণে পিছিয়ে যেতে থাকে কয়েক হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প।
রণতরি আইএনএস বিক্রান্তের ভেতরে যুদ্ধবিমান মিগ-২৯। ছবি: বিবিসি
তার মধ্যে করোনা মহামারির কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নতুন করে ধাক্কা খায় প্রকল্পের অগ্রগতি।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং শুক্রবার জানিয়েছেন, আগামী বছরেই শত্রু মোকাবিলায় সমুদ্রে নামবে এটি।
‘আইএনএস বিক্রান্ত’ ইন্ডিজেনাস এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ১ বা আইএসি-১ নামেও পরিচিত। কেরালার কোচি শিপইয়ার্ড লিমিটেডে নির্মিত হয়েছে এই যুদ্ধবিমানবাহী রণতরি।
কোচিতে সেই এয়ারক্রাফট কেরিয়ারের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, আগামী বছরই সমুদ্রে নামবে এই রণতরি। একই সময়ে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। এ উপলক্ষে দেশের নৌবাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে আইএনএস বিক্রান্ত।
ভারতের নৌবাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে আইএনএস বিক্রান্ত। ছবি:বিবিসি
২০ হাজার কোটি ভারতীয় রুপির এই প্রকল্প সম্পন্ন করার কথা ছিল ২০১৮ সালে। কিন্তু নানা কারণে তা পিছিয়ে যায়। নৌবাহিনী সূত্রে খবর, ২০২০ সালের নভেম্বরে ট্রায়াল সম্পন্ন হয়। এই রণতরি ৪০ হাজার টন ওজন বহন করতে পারবে।
১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজের তত্ত্বাবধানে প্রথম এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১১ সালে এর নির্মাণকাজ মোটামুটিভাবে শেষ হয়। ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট প্রথম জলে নামানো হয় এই রণতরিটিকে।
নৌবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, এ পর্যন্ত ভারতে যত রণতরি তৈরি হয়েছে তার মধ্যে এর নকশা সবচেয়ে জটিল। এটি দৈর্ঘ্যে ২৮২ মিটার, প্রস্থে ৬২ মিটার। এই রণতরিতে একসঙ্গে ২৫-৪০টি এয়ারক্রাফট থাকতে পারবে।
এই রণতরিতে যে যুদ্ধাস্ত্র আছে তাতে যেকোনো ধরনের রণকৌশলের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবে। এতে রয়েছে দুটি ৩২ সেল যুক্ত ভার্টিকাল লঞ্চ সিস্টেম, যেখান থেকে ৬২টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া সম্ভব।
ইসরায়েলের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধব্যবস্থা বারাক ওয়ান মিসাইল সিস্টেমও থাকবে আইএনএস বিক্রান্তে।