দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের স্ত্রী রোসমাহ মনসুর। অর্থ পাচার, কর ফাঁকি ও ঘুষ নেয়ার মামলায় তার সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরের হাইকোর্টে রোসমাহকে আনা হয়। আজকে (১ সেপ্টেম্বর) মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল।
মালয়েশিয়ার ঐতিহ্যগত হলদে পোশাকে ৭০ বছরের রোসমাহ আদালতে আসেন। বিচার শুরুর আগে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি।
হাইকোর্ট জানিয়েছে, ২০১৬ সালে ১৯ কোটি ৪০ লাখ রিঙ্গিত (৬ কোটি ১০ লাখ ডলার) ঘুষ নেয়ার বিনিময়ে বিদ্যুৎ কোম্পানি জাপাক হোল্ডিংসকে ১২৫ কোটি রিঙ্গিতের সৌর বিদ্যুতের কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তার (নাজিব রাজাকের স্ত্রী রোসমাহ মনসুর) বিরুদ্ধে।’
ফার্স্ট লেডি থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অপব্যবহার ও বিলাসবহুল জীবনযাপনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গত ২৩ আগস্ট দুর্নীতির দায়ে কারাগারে পাঠানো হয় মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে। ১২ বছর সাজা ভোগ করবেন ৬৯ বছরের এ রাজনীতিক। নাজিব রাজাক হলেন মালয়েশিয়ার শীর্ষ কোনো নেতা, দুর্নীতির দায়ে যাকে জেল খাটতে হচ্ছে।
২০২০ সালের জুলাইয়ে দোষী সাব্যস্ত হলেও, সে সময় আপিলের পর জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন নাজিব।
বিবিসির খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সাজা দেরিতে ঘোষণার আবেদন করেছিলেন নাজিব। বিচারক তা প্রত্যাখ্যান করেন।
নাজিব রাজাক ক্ষমতায় থাকার সময় ওয়ান এমডিবি নামে একটি রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন তহবিল থেকে ৪৫০ কোটি ডলার লোপাটের অভিযোগ ওঠে নাজিবের বিরুদ্ধে। এদের অধিকাংশ তার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেয়া হয়।
রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে অর্থ সরানোর অভিযোগ আদালতে প্রমাণ হলে, ২০২০ সালের জুলাইয়ে তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। জরিমানা করা হয় ৪৬.৮ মিলিয়ন ডলার।
আপিল শুনানিতে মঙ্গলবার আইনজীবীরা দাবি করেন, নাজিবকে বোঝানো হয়েছিল যে অ্যাকাউন্টে রাখা অর্থ সৌদি রাজপরিবারের পক্ষ থেকে এসেছে। এগুলো রাষ্ট্রীয় অর্থ না। অর্থ উপদেষ্টারা তাকে ভুল বুঝিয়েছিলেন।
প্রধান বিচারপতি তেংকু মাইমুন তুয়ান মাত রায়ে বলেন, ‘পাঁচ বিচারকের প্যানেল সর্বসম্মতিক্রমে দেখেছে যে সাতটি ঘটনায় নাজিবের দোষী প্রমাণ হওয়ার প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ছিল। এখানে আপিলের দরকার নেই।’