প্রভাবশালী শিয়া ধর্মগুরুর পদত্যাগের পর ইরাকের কয়েক হাজার মানুষ রাজধানী বাগদাদের একটি সরকারি প্রাসাদে হামলা চালায়। তবে প্রাসাদে ঢুকে কি যেন সবার হয়ে গিয়েছিল। ভাংচুর, লুটপাটের চেয়ে বিক্ষোভকারীরা অদ্ভূত সব কাণ্ড ঘটাতে ব্যস্ত ছিল।
অনেককেই দেখা গেছে প্রাসাদের ছাদ থেকে সুইমিংপুলে ঝাঁপ দিতে, আবার অনেকে ব্যস্ত ছিলেন রাজকীয় রুমে নানা ভংগীতে ছবি তোলার পোজ দেয়ায়।
সাদরিস্ট আন্দোলনের নেতা মুকতাদা আল-সদর সোমবার তার ভূমিকা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। সরকারে কোনো বিশেষ পদে না থাকা সত্ত্বেও ইরাকের রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় পরিমণ্ডলে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে সদরের।
প্রিয় ধর্মগুরুর আকস্মিক এ ঘোষণায় ভেঙে পড়েন ভক্তরা। এক পর্যায়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে শত শত সমর্থক। অনেকেই দেশের শাসনকেন্দ্র গ্রিন জোন এলাকায় দিকে ছোটেন। এটি দেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত এলাকা।
ইরাকি সেনাবাহিনী বলছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ২৩ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।
অবস্থা বেগতিক দেখে সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ইরাকজুড়ে জারি হয় কারফিউ। রক্তপাত বন্ধে মুকতাদা আল-সদর গ্রিন জোন থেকে বিক্ষুব্ধদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাতে সাড়া দিয়ে গ্রিন জোন ছাড়তে শুরু করেছে বিক্ষোভকারীরা।
অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় ইরাকের সঙ্গে স্থল সীমান্ত খুলে দিয়েছে ইরান। তবে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে অস্থিরতার মধ্যে নাগরিকদের ইরাক ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে কুয়েত।
ইরাকের সবশেষ নির্বাচনে সদরের জোট সবচেয়ে বেশিসংখ্যক আসনে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও সামগ্রিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। দ্বিতীয় বৃহত্তম জোটের সঙ্গে সরকার গঠন করতেও ব্যর্থ হন সদর। আর তাই গত বছরের অক্টোবরে হওয়া ভোটের পর থেকে ইরাকে কোনো সরকার নেই।
সদর জানান, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা সংস্কার না হওয়ার হতাশা নিয়ে পদত্যাগ করছেন তিনি।
বিবদমানদের উত্তেজনা কমিয়ে সংযমী হওয়ায় আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় সামরিক বাহিনীর বল প্রয়োগের বিষয়টি তদন্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইরাকের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল-কাদিমি।