ভারতে আগামী দুই মাসের মধ্যে ফাইভ-জি মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছেন ধনকুবের মুকেশ আম্বানি। এ জন্য ২৫ বিলিয়ন ডলারের একটি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান।
আম্বানি জানিয়েছেন, শুরুতে দিল্লি, মুম্বাইসহ বড় বড় শহরের বাসিন্দারা পাবেন এই সেবা। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে গোটা ভারতে ছড়িয়ে পড়বে উচ্চ গতির ইন্টারনেট। রিলায়েন্স গ্রুপ ইতোমধ্যে ফাইভ-জি স্মার্টফোন তৈরিতে গুগলের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে।
রিলায়েন্সের বার্ষিক সাধারণ সভায় সোমবার আম্বানি বলেছিলেন, ‘একবার ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে, এটি হবে বিশ্বের বৃহত্তম।’
পরিষেবাটি রিলায়েন্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জিওর মাধ্যমে চালু করা হবে। ভারতের সবচেয়ে বড় মোবাইল ক্যারিয়ার-জিও।
আম্বানি বলেন, ‘ফাইভ-জি স্মার্টফোন তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের সঙ্গে কাজ করছে রিলায়েন্স। আমরা চেষ্টা করছি, এই ফোনের দাম যেন সবার সাধ্যের মধ্যে থাকে।’
ভারতে সবচেয়ে সস্তা ফাইভ-জি স্মার্টফোনের দাম এখন প্রায় ১৫০ ডলার (১৪ হাজার ২৩৭ হাজার টাকা)।
ভারতে ডিজিটাল ভবিষ্যতে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই এখন উত্তপ্ত। ঠিক এমন সময়ে এলো এই ঘোষণা।
চলতি মাসের শুরুতে ফাইভ-জিসহ এয়ারওয়েভের জন্য রেকর্ড ১৯০০ কোটি ডলারের (১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি) নিলাম শেষ করেছে ভারত সরকার। এই নিলামে শীর্ষ ক্রেতা ছিল জিও।
নিলামে হেভিওয়েট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল ভোডাফোন আইডিয়া এবং ভারতী এয়ারটেল। তাদের পাশাপাশি দরপত্র সংগ্রহ করে আরেক ধনকুবের গৌতমের- আদানি ডেটা নেটওয়ার্ক।
উচ্চগতির মোবাইল ইন্টারনেটের পঞ্চম প্রজন্ম হলো ফাইভ-জি। চালকবিহীন গাড়ি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো উদীয়মান প্রযুক্তিগুলোর সহায়ক এই ফাইভ-জি।
এটিকে ১ ট্রিলিয়ন (প্রায় ৯৫ লাখ কোটি টাকা) ডলারের ডিজিটাল অর্থনীতিতে প্রবেশে ভারত সরকারের অন্যতম পরিকল্পনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত মে মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘ফাইভ-জি কেবল ইন্টারনেট গতিকে ত্বরান্বিত করবে না বরং উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানকেও বাড়িয়ে দেবে।’
মুকেশ আম্বানি ও তার পরিবার। ছবি: সংগৃহীত
৬৫ বছরের মুকেশ আম্বানি জানিয়েছেন, তার মেয়ে ইশা রিলায়েন্সের খুচরা উদ্যোগের নেতৃত্ব দেবেন। আর তার ছোট ছেলে অনন্ত তাদের জ্বালানি ব্যবসায় যোগ দেবেন।
মুকেশের বড় ছেলে আকাশ আম্বানি এ বছরের জুনে জিওর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স বলছে, ৯১.৯ বিলিয়ন ডলারের আনুমানিক সম্পদ রয়েছে মুকেশ আম্বানির। তিনি বিশ্বের ১১তম ধনী ব্যক্তি; এশিয়ার দ্বিতীয় ধনী।
মুকেশ আম্বানির প্রয়াত বাবা ধিরুভাই আম্বানি একটি টেক্সটাইল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যা শেষমেশ রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজে পরিণত হয়।
পেট্রোকেমিক্যাল, তেল ও গ্যাস, টেলিকম এবং খুচরা ব্যবসাসহ এটি এখন বাজারমূল্যের ভিত্তিতে ভারতের বৃহত্তম ব্যবসায়িক গোষ্ঠী।