ভয়াবহ বন্যায় দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ পাকিস্তানের তিন ভাগের এক ভাগ সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে।
পাকিস্তানের জলবায়ু মন্ত্রী শেরি রেহমানের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে বিবিসি।
আকস্মিক ভয়াবহ বন্যায় রাস্তা, বাড়িঘর ও কৃষকের ফসল ভেসে গেছে- পুরো পাকিস্তান মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখোমুখি।
শেরি রেহমান বলেন, ‘এটি (পাকিস্তান) একটি বিশাল সমুদ্র, পানি পাম্প করার মতো কোনো শুষ্ক জমি নেই। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ পানির নিচে। অতীতে আমরা যা দেখেছি (বন্যা পরিস্থিতি) তার সব কিছুই ছাড়িয়ে গেছে। আমরা এমন কিছুই দেখিনি।’
তার মতে, এটি একটি ভিন্নমাত্রার অকল্পনীয় সংকট।
গ্রামের পর গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। লক্ষাধিক বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।
জুনে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে অন্তত ১ হাজার ১৩৬ জন বন্যার কারণে মারা গেছেন। এর মধ্যে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৭৫ জন।
সোমবার দেশটির কর্তৃপক্ষ বলেছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, বন্যায় মারা যাওয়াদের এক-তৃতীয়াংশই শিশু বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটির কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ৩ কোটি ৩০ লাখের বেশি পাকিস্তানি – অর্থাৎ প্রতি ৭ জনের ১ জন এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তর সোয়াত উপত্যকায় বন্যার পানিতে ব্রিজ ও রাস্তা ভেসে গেছে। সেখানে গ্রামগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তানে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে দেশটির সেনা সদস্যরা
পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে হেলিকপ্টারের সাহায্যেও কর্তৃপক্ষ আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছে।
বন্যাক্রান্ত এলাকাগুলো থেকে যারা পালাতে সক্ষম হয়েছে- তাদের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
রোববার প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বন্যা আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শনের পর বলেন, ‘গ্রামের পর গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। লক্ষাধিক বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।’
পাকিস্তান এরই মধ্যে বন্ধুপ্রতিম দেশ ও দাতা সংস্থাগুলোর কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছে।
এর আগে সবশেষ ২০১০ সালে পাকিস্তানে মারাত্মক বন্যায় ২ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এবারের বন্যায় মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।