দুর্নীতি ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তা করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই) ও গোয়েন্দা সংস্থা ইডির মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার পরিকল্পিতভাবে তাকে ‘চোর প্রমাণের’ চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ মমতার।
সোমবার কলকাতার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের মঞ্চ থেকে এ কথা বলেন তৃণমূল নেত্রী।
বিজেপির নাম উল্লেখ না করেই মমতা সভায় বলেন, ‘পার্থ চোর, কেষ্ট চোর, অরূপ চোর, ববি চোর, আমরা সবাই চোর। আর আপনারা সাধু!
‘কারা বদনাম করছে, আমরাও তার লিস্ট রাখছি। কারা গ্রেপ্তার করছে, কারা হয়রানি করছে তার হিসাব রাখা হচ্ছে। গায়ের জোরে কারা আমাদের লোকদের নামে বদনাম রটাচ্ছে, তার তালিকাও হচ্ছে। সময়ে জবাব দেয়া হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকেও চোর বলা হচ্ছে। আমি রাজনীতিতে এসেছি সমাজসেবা করব বলে। আর কয়েকটা ভাড়া করা চোর, ধাপ্পাবাজ নেতাদের সাহায্যে আমার গায়ে কালি ছেটাতে চাচ্ছে তারা। এসব করে লাভ হবে না।
‘বিজেপি এই ৮-১০ বছরে দেশটার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এখন চোরের মুখে বড় বড় কথা। ইডি, সিবিআইকে দিয়ে আমার নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে লুট করা হচ্ছে। এসবের পরিণতি ভালো হবে না।’
পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন। গরু পাচার মামলায় বীরভূমের প্রভাবশালী নেতা অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে তাদের হেফাজতে আছেন। এমন দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ আরও কয়েকজন আছেন তদন্তকারী সংস্থার হাতে। বেশ কয়েকজন আছেন সন্দেহ ও আলোচনায়। ভারতের রাজনীতিতে হঠাৎ করেই দুর্নীতি ইস্যুতে চাপে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হাসপাতালে গেলে পার্থ, অনুব্রতকে দেখে মানুষ চোর-চোর বলে চিৎকার করছেন। রাজনীতির মাঠে তৃণমূল বিরোধীরা ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’ স্লোগান তুলে কর্মসূচি পালন করেছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রথমে ‘দুর্নীতির দায় দল নেবে না’ বলে ঘোষণা দেয়া হলেও সময় গড়াতেই দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে পার্থ ও কেষ্টের সমর্থনে নানা বক্তব্য দেয়া হচ্ছে।
সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তার সোমবার বিস্তর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের চোর প্রমাণে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।