বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারতীয় টুইন টাওয়ার এই ছিল, এই নেই

  •    
  • ২৮ আগস্ট, ২০২২ ১৪:৫০

ঘড়ির কাঁটা যখন ঠিক স্থানীয় সময় ২টা ৩০ মিনিট, তখনই প্রচুর বিস্ফোরক দিয়ে মুহূর্তেই গুঁড়িয়ে দেয়া হলো জোড়া ভবন।

চোখের পলকে মাত্র ৯ সেকেন্ডে ধূলিসাৎ হয়ে গেল আলোচিত ভারতীয় টুইন টাওয়ার।

স্থানীয় সময় বেলা ঠিক ৩টায় উত্তর প্রদেশের নয়ডার ৯৩-এ সেক্টরে এমারেল্ড কোর্টের জোড়া ভবনটি গুঁড়িয়ে দেয়া হলো বিস্ফোরক দিয়ে।

এনডিটিভিসহ একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এ দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করেছে। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে একটু একটু করে তৈরি হওয়া সেই গগনচুম্বী ভবন এখন অতীত। একটু আগেও যে ভবন দাঁড়িয়ে ছিল মাথা উঁচু করে, মুহূর্তেই তা নাই হয়ে গেল।

জোড়া এই ভবন ধ্বংসের পর এখন চলছে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম। কংক্রিটের অংশগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। তিন মাস তৎপরতা চালাবেন উদ্ধারকারীরা।

ভবনের চারপাশে মোতায়েন রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। ৫৬০ জন পুলিশ কর্মী, রিজার্ভ ফোর্সের ১০০ জন এবং জরুরি বাহিনীর চারটি দল ঘিরে আছে পুরো এলাকা।

ভারতীয় এ টুইন টাওয়ার ধ্বংস করতে ৯ হাজারের বেশি গর্ত খোঁড়া হয়। সেখানে রাখা হয় ৩৭০০ কেজির বেশি বিস্ফোরক। ১০০ মিটারের সুপারটেক টুইন টাওয়ার ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মতো।

ধ্বংসের আগে ভারতীয় টুইন টাওয়ার। ছবি: এনডিটিভি

#WATCH | Once taller than Qutub Minar, Noida Supertech twin towers, reduced to rubble #SupertechTwinTowersDemolition #TwinTowers #Noida #NoidaTowerDemolition pic.twitter.com/JvryYvD9gx

— The Times Of India (@timesofindia) August 28, 2022

নয়ডার ‘এমারেল্ড কোর্ট’ প্রকল্পেই তৈরি হয়েছিল ৪০ তলা উঁচু দুটি ভবন। যা উচ্চতায় কুতুব মিনারকেও ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু ওই জোড়া ভবন নিয়ে প্রথম থেকেই শুরু হয় বিতর্ক।

‘সবুজ পান্না’র নামে তৈরি হয়েছিল যে আবাসন, অভিযোগ ওঠে সেই আবাসন চত্বরের সবুজ ধ্বংস করেই এই টাওয়ার মাথা তুলতে চলেছে। যা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানান ওই এলাকার বাসিন্দারা।

এমারেল্ড কোর্টে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আবাসনগুলোর মাঝখানে মাথা তুলে দাঁড়ানো দুই জোড়া ভবনের নাম, ‘অ্যাপেক্স’ এবং ‘সিয়ান’। তবে ২০০০ সালে যখন ‘এমারেল্ড কোর্ট’ আবাসন তৈরির ভাবনাচিন্তা শুরু হলো, তখন এদের কথা ভাবা হয়নি। তখন কথা ছিল, গ্রেটার নয়ডার এই এলাকায় ১৪টি আবাসন ভবন তৈরি হবে। যার প্রত্যেকটি হবে ৯ তলা উচ্চতার। কিন্তু ২০১২ সালে হঠাৎই বদলে যায় পরিকল্পনা।

‘এমারেল্ড কোর্ট’ নির্মাণের দায়িত্বে ছিল সুপারটেক নামে একটি সংস্থা। তারাই ২০১২ সালে ঘোষণা করে পরিকল্পনা বদলের কথা। বদল হওয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘এমারেল্ড কোর্ট’-এ ১৪টির বদলে ১৫টি আবাসন ভবন হবে। ৯ বদলে উচ্চতা হবে ১১ তলা। আর হবে নতুন দুটি গগনচুম্বী ভবন যার উচ্চতা কুতুব মিনারকেও ছাড়াবে।

২৪ তলা পর্যন্ত এই জোড়া ভবন বানানো হবে বলে স্থির করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, নিয়ম ভেঙে সেই ভবন ৪০ তলা করা হয়।

‘সিয়ান’ আর ‘অ্যাপেক্স’ মাথা তোলার পর তা নিয়ে আপত্তি তোলেন ‘এমারেল্ড কোর্ট’-এর বাসিন্দারা। তারা অভিযোগ করেন, ভবন দুটি ভেঙে দেয়া হোক, কেননা সেগুলো তৈরি হয়েছে বেআইনিভাবে। এ ব্যাপারে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আপিল করেন তারা, যা হাইকোর্টে মঞ্জুর হয়। ২০১৪ সালে ‘অ্যাপেক্স’ এবং ‘সিয়ান’ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

এলাহাবাদ হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় সুপারটেক। প্রায় সাত বছর ধরে মামলা চলার পর ২০২১ সালে দেশের শীর্ষ আদালতও টাওয়ার দুটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ বহাল রাখে।

নির্মাণ সংস্থা সেই রায়কে পুনর্বিবেচনা করতে বলে। এমনকি ‘এমারেল্ড কোর্ট’-এর অন্য বাসিন্দাদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গও উত্থাপন করে আদালতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট পুরোনো রায়ই বহাল রাখে।

এ বিভাগের আরো খবর