আসন্ন শীতে ইউরোপবাসীর ঠান্ডা যে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লাগবে তার ইঙ্গিত মিলছে এখনই। এখন যে দামে এসব দেশে বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে, শীত আসতে আসতে তা বেশ বেড়ে যাবে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি সংকট, সঙ্গে আছে খরার প্রভাব। এসবই যথেষ্ট যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো দেশগুলোতে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে। হয়েছেও তাই।
বৃদ্ধিতের এমন রেকর্ড দাম বৃদ্ধির ফলে জীবনযাত্রায় ব্যয়ও বাড়বে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।
যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফিস অফ গ্যাস অ্যান্ড ইলেকট্রিসিটি মার্কেটস (ওএফজিইএম বা অফজেম) শুক্রবার জানিয়েছে, চলতি বছরের অক্টোবর থেকে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানির দাম ৮০ শতাংশ করে বাড়ানো হবে।
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়বে আগের চেয়ে ১০ গুণ। মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাসাবাড়িতে জ্বালানি বাবদ গড় বার্ষিক বিল দাঁড়াবে ৩ হাজার ৫৪৯ পাউন্ডে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আগামী বছর জার্মানির বিদ্যুতের প্রতি মেগাওয়াটের দাম বেড়ে হচ্ছে ৯৯৫ ডলার। ১০৯৬ ডলার হচ্ছে ফ্রান্সের প্রতি প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুতের দাম। এটি এক বছর আগের দামের চেয়ে ১০ গুণ।
অফজেমের প্রধান নির্বাহী জোনাথন ব্রেয়ারলি বলেন, ঊর্ধ্বমুখী বাজার পরিস্থিতির কারণে আগামী বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যে আরেক দফা বাড়তে পারে জ্বালানির মূল্য।
করোনা পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক সংকট এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় এমন অস্থিরতার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছে অফজেম।
ইউরোপে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ আসে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পে উৎপাদন ২০ ভাগ কমে এসেছে যুক্তরাজ্যে।
এমন পরিস্থিতিতে সামনের শীতে জানুয়ারিতে শিল্প-কারখানা ও সাধারণ পরিবারগুলোর জন্যও সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির’ বিষয় মাথায় রেখে সরকারি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার পরও সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ব্যবহারের ছয় ভাগের এক ভাগ ঘাটতি থাকবে।
বেলজিয়ামের ব্রাসেলসের ব্রুগেল থিঙ্ক ট্যাঙ্কের গবেষণা সহকারী জিওভানি সাগারভাট্টি এএফপিকে বলেন, ইউরোপের সব দেশের জন্য শীতকাল একটি কঠিন সময় হতে চলেছে। বিদ্যুতের দাম বাড়তি থাকবে। দাম সামনে আরও বাড়তে পারে।