রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ হলে ৫০০ কোটির ওপর মানুষ মারা যাবে শুধু খাদ্যাভাবে।
নেচারে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এমনটাই বলা হয়েছে।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, দুই দেশের পারমাণবিক যুদ্ধের পর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ছাইয়ে ঢেকে যাবে। ফলে সূর্যালোক পৃথিবীতে আসতে পারবে না। বিপর্যয় ও খাদ্যাভাব নেমে আসবে পৃথিবীতে।
আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করবে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের রুডগার্স ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, সত্যিকার বিপর্যয় হবে সংঘাতের পরের বছরগুলোতে। তখন বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে এবং খাদ্যশস্যের ওপর নিউক্লিয়ার উইন্টারের প্রভাব পড়বে।
এই নিউক্লিয়ার উইন্টার তখনই আসবে যখন পারমাণবিক সংঘাতের ফলে সৃষ্ট ছাই বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে এবং পরের ১-২ বছর সূর্যালোক প্রবেশে বাধা দেবে। ফলে মানুষের যেই প্রধান খাদ্য উপাদানগুলো রয়েছে তার মধ্যে চাল, গম, ভুট্টা, সয়াবিন ছাড়াও মাছ উৎপাদন ব্যাহত হবে। বিশ্বব্যাপী দেখা দেবে খাদ্যসংকট।
তবে নিউক্লিয়ার উইন্টার পুরো পৃথিবীতেই একসঙ্গে হবে না। এটি নির্ভর করবে বায়ুর গতির ওপর।
গবেষকরা এ ক্ষেত্রে জলবায়ুর মডেল ব্যবহার করে দেখেছেন, আকাশে ধোঁয়া ও ছাইয়ের মেঘের কারণে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে খাদ্য সরবরাহ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে।
এ খাদ্যসংকট এতই ভয়াবহ হবে যে এর ফলে ৫০০ কোটির বেশি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে।
রাশিয়া ও আমেরিকা দুই দেশই বিশ্বের প্রধান খাদ্য রপ্তানিকারক দেশ। তো এই দুই দেশেই পারমাণবিক যুদ্ধ লাগলে খাদ্য আমদানিনির্ভর দেশগুলোর ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়বে। এরই মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে এর কিছুটা আঁচ পাওয়া গেছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও গবেষণাপত্রের সহলেখক অ্যালান রোবক বলছেন, ‘তথ্যগুলো আমাদের একটি জিনিসই বলে, আমাদের অবশ্যই একটি পারমাণবিক যুদ্ধকে ঘটতে বাধা দিতে হবে।’