ভয়ঙ্কর হামলার পর হাসপাতালে নিবিড় চিকিৎসাধীন সালমান রুশদি। জটিল অস্ত্রোপচারের পর মাত্র কথা বলার সক্ষমতা ফিরে পেয়েছেন। এর মধ্যেও সহজাত ও অদম্য রসবোধ হারাননি আলোচিত এই ঔপন্যাসিক।
এক টুইটে রোববার এ কথা জানান রুশদির ছেলে জাফর রুশদি।
জাফর লিখেছেন, ‘আমার বাবা জীবন বদলে দেয়া আঘাত সহ্য করেছেন। তবু তিনি পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন।’
A family statement… @SalmanRushdie #SalmanRushdie pic.twitter.com/tMrAkoqliq
— Zafar Rushdie (@ZafRushdie) August 14, 2022এর আগে লেখকের এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলি জানিয়েছিলেন, সালমান রুশদির চিকিৎসা চলছে। সময় লাগবে সেরে উঠতে। কারণ আঘাতগুলো গুরুতর।
নিউ ইয়র্কে শুক্রবার সকালে এক অনুষ্ঠানে হামলার শিকার হন ৭৫ বছরের সালমান রুশদি। লেবানিজ বংশোদ্ভূত যুবক হাদি মাতার মঞ্চে উঠে তার ঘাড়ে ও পেটে ১০-১৫ বার ছুরি দিতে আঘাত করে। পরে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয় হাদিকে।
- আরও পড়ুন: রুশদির ওপর হামলাকারী কে এই হাদি মাতার
রুশদির ছেলে শুক্রবার এক টুইটে লিখেছিলেন, ‘হামলার পর আমার বাবা গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’
শনিবার রুশদিকে ভেন্টিলেটর থেকে সরিয়ে নেয়ার পর জাফর বলেছিলেন, ‘স্বস্তি পাচ্ছি। বাবা কিছুটা কথা বলতে পেরেছেন।’
- আরও পড়ুন: কথা বলতে পারছেন রুশদি
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি ১৯৮১ সালে ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ উপন্যাস দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। শুধু যুক্তরাজ্যেই বইটির ১০ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়।
১৯৮৮ সালে দ্য স্যাটানিক ভার্সেস উপন্যাস লেখার পর থেকে বছরের পর বছর প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে আসছেন এই লেখক। দ্য স্যাটানিক ভার্সেস তার রুশদির চতুর্থ উপন্যাস। এই বই লেখার জন্য রুশদিকে ৯ বছর আত্মগোপনে থাকতে হয়।
পরাবাস্তববাদী ও উত্তর-আধুনিক এই উপন্যাসটি কিছু মুসলিমের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। ইরান ও বাংলাদেশসহ কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশে বইটি নিষিদ্ধও করা হয়। বইটি প্রকাশের এক বছর পর, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আহ্বান জানান । তার মাথার জন্য ৩০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন খোমেনি।
তারপরও নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন রুশদি। এক পর্যায়ে ইরান সরকার সরে আসে খোমেনির ডিক্রি থেকে।
দ্য স্যাটানিক ভার্সেস প্রকাশনার পর সহিংসতায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ছিলেন উপন্যাসটির জাপানি ভাষায় অনুবাদকও। রুশদির ব্রিটিশ এবং আমেরিকান নাগরিকত্ব রয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে একজন সোচ্চার কণ্ঠ তিনি।