ভারতীয় বংশোদ্ভূত বুকার জয়ী লেখক সালমান রুশদির ওপর হওয়া হামলার ঘটনার প্রশংসা করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
অনলাইনে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে এই হামলার প্রশংসা করার পাশাপাশি তার পূর্বসূরি আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির ফতোয়ার কথাও স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, 'ফতোয়াটি ছিল এমন এক বুলেট ছোড়ার মতো, যা তার লক্ষ্যে আঘাত করা না পর্যন্ত ছুটতেই থাকত।'
৩৩ বছর আগেই স্যাটানিক ভার্সেস বইয়ে ইসলাম ধর্মকে হেয় করার অভিযোগে তৎকালীন ইরানের প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রহুল্লাহ খোমেনি তার ও তার বইয়ের প্রকাশকদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেছিলেন। এমনকি তিনি বলেছিলেন, কেউ রুশদিকে হত্যা করতে গিয়ে নিহত হলে সে শহীদ, সে জান্নাতে যাবে।
নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠান মঞ্চে হামলার শিকার হন সালমান রুশদি
ইরানের পক্ষ থেকে হামলাকারী হাদি মাতারের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি, এমনকি হামলার প্রশংসা করলেও আয়াতুল্লাহ খামেনিও হামলাকারীর বিষয়ে কিছু বলেননি।
ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের শাসকদের ও বিপ্লবী বাহিনীর প্রতি হামলাকারীর সহানুভূতি ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাদির অ্যাকাউন্টগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তিনি শিয়া চরমপন্থা এবং ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রতি সহানুভূতিশীল।
পুলিশের হাতে আটক হামলাকারী হাদি মাতার
পুলিশের হাতে আটক হাদি মাতারের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় হলেও তিনি নিউ জার্সিতে বসবাস করছিলেন। তার বিরুদ্ধে এখনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কর্তৃপক্ষ বলছে, রুশদির অবস্থা দেখে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হবে হাদির বিরুদ্ধে।
হাদি মাতারের আগের রেকর্ড জানতে এবং হামলার উদ্দেশ্য বের করতে ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) সহায়তা চেয়েছে নিউ ইয়র্ক পুলিশ।
ফতোয়াটি ছিল এমন এক বুলেট ছোড়ার মতো, যা তার লক্ষ্যে আঘাত না করা পর্যন্ত ছুটতেই থাকত।
রুশদি ছাড়াও এর আগে ১৯৯১ সালে স্যাটানিক ভার্সেসের ইতালীয় ভাষায় অনুবাদকারী ইত্তোরে ক্যাপরিওলোকে তার ফ্ল্যাটেই ছুরি নিয়ে আক্রমণ করা হয়। আক্রমণকারী ছিলেন একজন ইরানি।
ইত্তোরের ওপর হামলার একই বছরে বইটির জাপানি ভাষায় অনুবাদকারী হিতোশি ইগারাশিকে টোকিওতে ছুরি দিয়ে হত্যা করা হয় এবং হত্যাকারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। হিতোশি ছিলেন তুলনামূলক সংস্কৃতির একজন স্কলার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক। যিনি সত্তরের দশকে ইরানে পড়াশোনা করেন।