বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাজ্যে জানুয়ারিতে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শঙ্কা

  •    
  • ১০ আগস্ট, ২০২২ ০৯:১২

যুক্তরাজ্যে বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফীতির কারণে এনার্জি প্রাইস ক্যাপের অনুমানে প্রথমবারের মতো গড় বার্ষিক বিদ্যুৎ বিল ৪ হাজার পাউন্ড ছাড়িয়ে গেছে। অথচ শীত এখনও শুরুই হয়নি। অনেক পরিবারই এরই মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। এদিকে বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবেলায় জানুয়ারিতে যখন দেশটিতে তীব্র শীতের সময়, তখনই পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।

ঠান্ডা আবহাওয়ায় যুক্তরাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পায়, ফলে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধিরও প্রয়োজন হয়। অথচ ইউক্রেন সংকটের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অবরোধ আরোপ করায় ইউরোপের দেশগুলোর রুশ গ্যাস প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের মতো দেশেও সামনের শীতে জানুয়ারিতে শিল্প-কারখানা ও সাধারণ পরিবারগুলোর জন্যও সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।

দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির’ বিষয় মাথায় রেখে সরকারি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার পরও সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ব্যবহারের ছয় ভাগের এক ভাগ ঘাটতি থাকবে।

সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতিতে জানুয়ারিতে যদি গড় তাপমাত্রা হ্রাস পায় এবং নরওয়ে ও ফ্রান্স থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের পরিমাণ যদি কমে আসে, টানা ৪ দিন বিদ্যুৎ নাও থাকতে পারে। বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় আবাসিক বাড়িতে, শিল্পের ক্ষেত্রে পরিকল্পিত লোডশেডিং দেয়া হতে পারে।

ইউরো উইকলি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল গ্রিড বিদ্যুৎ বিপর্যয় এড়াতে বিশাল সংখ্যক গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে।

শীতকালে গড় তাপমাত্রা কমে এলে নরওয়ে ও ফ্রান্স থেকেও গ্যাস আমদানি কমে আসবে, ফলে যুক্তরাজ্যকে গ্যাস সংরক্ষণের জন্য জরুরি ব্যবস্থা চালু করতে হতে পারে।

এদিকে যুক্তরাজ্যে বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফীতির কারণে এনার্জি প্রাইস ক্যাপের অনুমানে প্রথমবারের মতো গড় বার্ষিক বিদ্যুৎ বিল ৪ হাজার পাউন্ড ছাড়িয়ে গেছে। অথচ শীত এখনও শুরুই হয়নি।

অনেক পরিবারই এরই মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে।

ন্যাশনাল গ্রিড সতর্ক করে বলেছে, বিদ্যুতের দাম দ্রুত বাড়তে পারে। এই বছরের শুরুতেই ঋষি সুনাক যখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন, তখনই তিনি বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে ৪০০ ডলার করে ছাড় দিয়েছিলেন।

এবারের শীতে সরকারকে আরও বেশি কিছু করতে হতে পারে।

ফ্রান্স, নরওয়ে, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসকে সংযোগকারী বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে বিদ্যুৎপ্রবাহ কম হলে ব্রিটিশদের জীবন আরও কঠিন হয়ে যেতে পারে।

নরওয়ে সোমবার বলেছে, তাদের যে বিদ্যুৎ চাহিদার অভ্যন্তরীণ ঘাটতি রয়েছে, তা রোধ করতে শীতকালে বিদ্যুৎ রপ্তানি সীমিত করার উপায়গুলো খুঁজছে।

নরওয়ের তুলনায় যুক্তরাজ্যে বিদ্যুতের দাম অনেক বেশি। অনেক ক্ষেত্রেই দেশটি বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে আমদানির ওপর নির্ভর করে। তাই নরওয়ের এমন সিদ্ধান্তে দেশটির বিদ্যুৎ খরচ আরও বাড়বে এবং ন্যাশনাল গ্রিডকে কৌশলগত রিজার্ভ ব্যবহারে বাধ্য করতে পারে।

এদিকে শীতের মাত্রা বাড়লে যুক্তরাজ্যকে গ্যাসের জন্য অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের মুখাপেক্ষী হতে হবে। কিন্তু ইউরোপের অন্যতম প্রধান গ্যাসের উৎস নর্ডস্ট্রিম-১-এ রাশিয়া মেরামতের কথা বলে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়ায় ইউরোপীয় দেশগুলো এরই মধ্যে চাপে রয়েছে।

ফলে যুক্তরাজ্যের গ্যাস ঘাটতিতে ইউরোপীয় দেশগুলো কতটুকু কী করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড সতর্ক করেছে যে, মুদ্রাস্ফীতির চাপ দেশটিকে অর্থনৈতিক মন্দার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উত্তরসূরি যেই হোক না কেন তার ওপর এই বর্তমান গ্যাসসংকট একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। যদিও জনসনের দুই সম্ভাব্য উত্তরসূরি লিস ট্রাস ও ঋষি সুনাক উভয়েই মধ্যবিত্তের ওপর চাপ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

যদিও যুক্তরাজ্যের ব্যবসা, জ্বালানি ও শিল্প পরিসংখ্যান বিভাগ বলছে, ‘এই পরিস্থিতি এমন কিছু না, যা আমরা চাই। বাসা, ব্যবসা ও শিল্প আত্মবিশ্বাসী হতে পারে যে তারা তাদের প্রয়োজনীয় গ্যাস পাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর