শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় পশ্চিমবঙ্গের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার ঘনিষ্ঠ মডেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের পিএমএলএ আদালতের বিচারপতি জীবন কুমার সাধু শুক্রবার এই নির্দেশ দেন।
ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির তদন্তকারীরা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে অভিযান চালায় ২৩ জুন। একই সঙ্গে অভিযান চলে তার আত্মীয়-পরিজনদের বাড়িতে। ইডির ১১টি দল তল্লাশি চালায় এসব স্থানে।
অভিযান ও তল্লাশির সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ মডেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ৬০ কোটি টাকাসহ বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে। অভিযুক্ত মডেলের বাড়িতে কোটি কোটি টাকা থাকার এ ঘটনায় শুধু তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইমেজ নয়, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির এখন টালমাটাল হাল। রাজ্য সরকার দায় এড়াতে নিচ্ছে নানা কৌশল। বক্তব্যে সতর্ক সবাই।
তৃণমূলের মহাসচিব ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এরই মধ্যে দল ও সরকারের সব পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। পার্থের পাপের দায় দলের নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি বড় ঘটনা এবং তাতে তৃণমূল কংগ্রেস দায় এড়াতে পারে না বলে মনে করছেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা। তারা মমতা-মোদি বৈঠকের প্রতি ইঙ্গিত করে সেখানে ‘সমঝোতা’ হচ্ছে বলেও অভিমত দিচ্ছেন।
দুর্নীতির দায়ে পার্থ ও অর্পিতাকে গ্রেপ্তারের পর প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (পিএমএলএ) কোর্টে হাজির করে ইডি তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়। দুই দফায় ১২ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার তাদের আদালতে তোলা হয়।
পিএমএলএ কোর্টের বিচারক এ পর্যায়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এ সময়ে ইডির তদন্তকারীরা জেলে গিয়ে তাদের জেরা করতে পারবেন, বয়ান নথিভুক্ত করতে পারবেন।
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রেসিডেন্সি জেলে এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আলিপুর নারী জেলে পাঠানো হয়। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে ১৮ আগস্ট।
তদন্তকারীরা পার্থ ও অর্পিতার নামে নতুন করে ৫০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে। সে বিষয়ে তথ্য তালাশের জন্য ফের তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান ইডির আইনজীবী।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী আদালতে বয়স ও অসুস্থতার কথা বলে জামিনের আবেদন জানান। অন্যদিকে অর্পিতার আইনজীবী প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা পেতে আবেদন করেন। বিচারক তাদের আবেদনে সাড়া দেননি।