বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে মুসলমানরা কোন পক্ষে?

  •    
  • ৫ আগস্ট, ২০২২ ২৩:৩২

ইউক্রেনে চলছে রাশিয়ার সামরিক অভিযান। একের পর এক অঞ্চল দখলে নিচ্ছে রুশ সেনারা। মুসলিম অধ্যুষিত চেচনিয়ার যোদ্ধারা যোগ দিয়েছে পুতিন বাহিনীর সঙ্গে। তবে ক্রিমিয়ার নির্বাসিত তাতার সম্প্রদায় (মুসলিম) পাশে দাঁড়িয়েছে ইউক্রেনীয় সেনাদের।    

আলি খাদজালি থাকেন রাশিয়া-ইউক্রেনের সীমানা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের একটি শহর খারকিভে। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি ছয়টি স্বেচ্ছাসেবক দলের একটির সঙ্গে মানবিক সহায়তা এবং যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে কাজ করছেন

৩০ বছরের টগবগে যুবক খাদজালি। পরনে টুপি, হুডি এবং কার্গো প্যান্ট। মে মাসের মাঝামাঝি এক বিকেলে কাজের বিরতিতে আছেন। রুশ বাহিনীকে শহর থেকে হটিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে তীব্র গোলাবর্ষণে উত্তর শহরতলির অনেক জায়গা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

কামানের গর্জন এখনও এই নির্জন মহল্লায় প্রতিধ্বনিত হয়। মাঠের মধ্যে রঙিন দোলনাটি কীভাবে যেন এখনও অক্ষত।

খাদজালির জন্ম ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এই খারকিভে। মা ইউক্রেনীয়, বাবা সিরীয়। ২০১১ সালে সেখানে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ায় আগ পর্যন্ত নিয়মিত সিরিয়ায় আসা-যাওয়া ছিল তার। ২০১৫ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পরে রাশিয়া। দেশটির নিয়ন্ত্রণ এখন অনেকটাই মস্কোর হাতে।

খাদজালি বলেন, ‘আমার মাতৃভূমি ইউক্রেন এবং সিরিয়া। দুই দেশই রুশ আগ্রাসনের শিকার হয়েছে।’

যুদ্ধে যোগদান

২০১৫ সালের দিকে খাদজালি ইমাম হয়ে ওঠেন, যিনি যুদ্ধের মধ্যে আধ্যাত্মিক সেবা প্রদান দিয়ে থাকেন।

আগের বছর ময়দান রেভ্যুলেশন দেখেছিল ইউক্রেনীয়রা। প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের রাশিয়াপন্থি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমেছিল দেশটির জনগণ।

বিক্ষোভ দমাতে কঠোর অবস্থান নেয় প্রশাসন। নৃশংস এক ক্র্যাকডাউনে প্রাণ হারায় শতাধিক বিক্ষোভকারী, হাজার হাজার মানুষ আহত হয়।

শেষ পর্যন্ত গদি ধরে রাখতে পারেননি ইয়ানুকোভিচ, তাকে উৎখাত করা হয়। এর পরই, রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদিরা দোনেস্ক এবং লুহানস্কের ডনবাস অঞ্চলে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল।

ইসা আকায়েভ ক্রিমিয়া নামক একটি ব্যাটালিয়নের প্রধান এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইকে ক্রিমিয়াতে ফিরে যাওয়ার লড়াই হিসাবে দেখেন। ছবি: আল জাজিরা

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান শুরু করলে খাদজালি তার দেশকে (ইউক্রেন) সাহায্য করার উপায় খুঁজছিল। এক সময় তার মনে হয়, ডনবাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অল্প সংখ্যক মুসলিম সেনারা হয়ত তাকে সমর্থন দেবে।

খাদজালি বলেন, ‘যুদ্ধরত একটি দেশে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী একটি ভূমিকা পালন করার চেয়ে ভাল উপায় কী হতে পারে?’

ইমাম হিসেবে নামাজে নেতৃত্ব দিতেন খাদজালি। হালাল খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেন। সেনাদের ধর্মীয় নির্দেশ, মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা এবং মানবাধিকার সম্পর্কে নির্দেশনা দিতেন।

তিনি বলেন, ‘সরল সেনাদের সঙ্গে কথা বলা আমার দায়িত্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হতে পারে।’

খাদজালি এখনও এই দায়িত্বগুলো পালন করেন। তবে এখন তার দায়িত্ব আরও বেশি। প্রায়শই তাকে বিপজ্জনক ফ্রন্ট-লাইনে লোকেদের সাহায্য করতে হয়।

খাদজালি বলেন, ‘আমাদের কাছে সাহায্যের প্রয়োজন এমন লোকদের একটি তালিকা রয়েছে। আমরা তাদের প্রতি সপ্তাহে পরীক্ষা করি। যেমন, আমরা বয়স্ক ব্যক্তিদের ওষুধ দিই, যাদের এটি প্রয়োজন। পরিবারগুলোয় নিত্যপণের সরবরাহ দিয়ে থাকি।’

খারকিভের কয়েক সপ্তাহের বোমা হামলার বিধ্বস্ত কয়েকটি ভবন।ছবি: আল জাজিরা

৪ কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার ইউক্রেনে খ্রিস্টানরাই সংখ্যাগুরু। ১ শতাংশ মুসলমানের বাস সেখানে। রাশিয়ার আক্রমণের পর এদের অনেকে যুদ্ধে যোগ দিয়েছে। অনেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অবিচারের ইতিহাস তুলে ধরছে।

ইউক্রেনের মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যাগরিষ্ঠই ক্রিমিয়ান তাতার। তারা তুর্কি বংশোদ্ভূত সুন্নি মুসলিম। নিজ অঞ্চল ক্রিমিয়ায় ফিরে যেতে এরা লড়াই করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ২০১৪ সালে কৃষ্ণ সাগরের এই জায়গাটির দখল নেয় রাশিয়া।

ক্রিমিয়ান তাতার: অত্যাচারিত সাম্প্রতিক অতীত

ইউক্রেনে ইসলামের একটি দীর্ঘ এবং গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস রয়েছে। কেবল ভ্রমণকারী ব্যবসায়ী বা ধর্মপ্রচারকদের হাতে এখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠা পায়নি। এখানকার মানুষের হৃদয়ে আছে ইসলাম। ক্রিমিয়ার খানাতে ১৫ থেকে ১৮ শতক পর্যন্ত ইসলাম রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ছাপ রেখে গেছে।

ক্রিমিয়ান তাতারদের সাম্প্রতিক অতীতে অত্যাচারিত হতে হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্তালিন তাদের নির্বাসিত করেন। যাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল তাদের মধ্যে ছিল চেচনিয়া এবং ইঙ্গুতেটিয়ার মুসলিম জনগোষ্ঠী। বর্তমানে উত্তর ককেশাসের অঞ্চল দুটি রুশ প্রজাতন্ত্র। ১৯৪৪ সালে তাদের মাতৃভূমি থেকে উৎখাত করা হয়।

খাদজালি খারকিভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি দেখেছেন তার মাতৃভূমি সিরিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ই রাশিয়ার আগ্রাসনের শিকার হয়েছে। ছবি: আল জাজিরা

এখন চেচেন সেনারা রুশ-ইউক্রেন সংঘাতে দুই পক্ষেই লড়ছে। এটা অনেকটা একটি যুদ্ধের মধ্যে ছোট আরেক প্রক্সি যুদ্ধের মতো। চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ পুতিনের অনুগত। তার সেনারা চেচেন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধেই অস্ত্র তুলে নিয়েছে।

আবার ওদিকে ইউক্রেনের পক্ষেও যুদ্ধ করছে চেচেনদের একটি অংশ। তাদের বেশিরভাগই বিদেশি স্বেচ্ছাসেবক। স্বাধীনতার জন্য দুটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর প্রতিশোধ নেয়ার একটি সুযোগ এখন তাদের সামনে। লড়াইটা আসলে শুরু হয় ১৯৯৪ সালে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায়। ২০০৯ সাল পর্যন্ত চলে এ লড়াই। যুদ্ধে রুশ বাহিনী চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিল।

১৯৪৪ সালের ১৮ মে সোভিয়েত ইউনিয়নের রেড আর্মি ক্রিমিয়া থেকে অক্ষ বাহিনীকে বিতাড়িত করার মাত্র কয়েকদিন পর ক্রিমিয়ান তাতারদের পুলিশ আটক করে। নাৎসিদের সহযোগিতার অভিযোগে তাদের তখন নির্বাসিত করা হয়। রেহাই পায়নি রেড আর্মিতে ক্রিমিয়ান তাতার এবং ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের নায়ক’ মর্যাদাপ্রাপ্তরাও।

ইসা আকায়েভ উজবেকিস্তানে একটি নির্বাসিত ক্রিমিয়ান তাতার পরিবারে বেড়ে ওঠেন। ছবি: আল জাজিরা

পরিবারগুলোকে একপ্রকার অবরুদ্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বাধ্য হয়ে গরুর গাড়িতে চেপে তারা পাড়ি জমিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে; বেশিরভাগকে নির্বাসিত করা হয়েছিল উজবেকিস্তানে।

প্রায় দুই লাখ ক্রিমিয়ান তাতারকে সে সময় সরিয়ে নেয়া হয়। হাজার হাজার তাতার তখন নিহত হয়, অপুষ্টিতে ভুগেছিল অনেক মানুষ। খামার এবং কারাগারের মতো শ্রম শিবিরে তারা ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রম করত।

সোভিয়েত কালার

উজবেকিস্তানের সমরকন্দ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের একটি যৌথ খামারে ক্রিমিয়ার তাতারদের অনেককে পাঠানো হয়েছিল, তাদের মধ্যে এখন আছে ইউক্রেনে সেবারত একটি স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের কমান্ডার ইসা আকায়েভের পরিবার।

আকায়েভের বয়স ৫৭। লম্বা দাড়িওয়ালা ধার্মিক আকায়েভ ১৩ সন্তানের পিতা। রাজধানী কিয়েভে তিনি স্মরণ করেন ১৯৭০ এর দশকে উজবেকিস্তানে নির্বাসনের দিনগুলোর কথা, যেখানে তিনি বেড়ে উঠেছিলেন। তখন আকায়েভের বয়স ছিল ১০। তরুণ উদ্যমী আকায়েভ সেময়ে স্কাউট আন্দোলনের জন্য শিশুদের প্রস্তুত করেছিলেন।

আকায়েভ একটি সেনাশিবিরে যোগদানের জন্য তার জন্মভূমি ক্রিমিয়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি সাংস্কৃতিক শোতে তার শিক্ষককে বলেছিলেন, তিনি তার ক্রিমিয়ান তাতার ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কিছু করবেন।

আকায়েভ যখন বিভ্রান্ত হয়ে উজবেকিস্তানে ফেরেন, সেখানে তিনি তার মায়ের কাছে যান। বিরক্ত হলেও মা তাকে ঘটনাটি উপেক্ষা করতে বলেছিলেন। তাদের কাছে সাম্প্রদায়িক নির্বাসন ছিল একটি দীর্ঘ চাপা অসন্তোষ।

তবে আকায়েভের দাদি অতীতের ঘটনা চেপে রাখতে পারেননি। তিনি তাকে পুরনো দিনের ঘটনা বলেছেন।

দাবি একবার লাল নিশানের স্কার্ফের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন, যা তিনি গর্ব করে গলায় পরতেন। এটিকে ‘সোভিয়েত কলার’ বলে অভিহিত করেছিলেন তিনি। এরপর তিনি আর কখনও আকায়েভের সামনে এটি পরেননি।

আকায়েভ বলেন, ‘তিনি (দাদি) প্রায়শই ক্রিমিয়ার কথা বলতেন। সেখানকার সৌন্দর্য, প্রকৃতি এবং সমুদ্র উপকূল নিয়ে কথা বলতেন। বলতেন কীভাবে রুশ অভিজাতরা তাদের সঙ্গে অন্যায় করেছে।

ইউক্রেন এ নির্বাসনকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও রাশিয়া ক্রিমিয়ান তাতারদের এ ইতিহাস মনে রাখতে দিতে নারাজ। ২০১৪ সালের ১৮ মে ক্রিমিয়ায় হাজার হাজার মানুষ নির্বাসনের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সমাবেশে যোগ দিয়েছিল রুশ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে।

দেশে ফেরার লড়াই

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন রাশিয়া ক্রিমিয়া দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন আকায়েভ ব্যবসা করতেন। সে সময়ে তিনি রাশিয়ান দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি সশস্ত্র বাহিনী গঠন করতে চেয়েছিলেন।

অপ্রস্তুত ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী সে সময় কোনো যুদ্ধ ছাড়াই উপদ্বীপ ছেড়ে দেয়। ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডের মতো অনেক কমান্ডার এমন আত্মসমর্পণ মেনে নিতে পারেননি।

আকিয়াভ বলেন, ‘সশস্ত্র প্রতিরোধে সমর্থন দেয়ার জন্য স্থানীয় ক্রিমিয়ান নেতাদের কাছে আবেদন করার চেষ্টা করেছিলাম। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এক সময় বুঝতে পারি, রুশ এজেন্টরা আমাকে অনুসরণ করছে।

‘এমন পরিস্থিতে মূল ভূখণ্ড ইউক্রেনে পালানোর সিদ্ধান্ত নিই। ক্রিমিয়ার রাজধানী সিমফেরোপল থেকে অনেকটা নাটকীয়ভাবে পালিয়ে যাই।

‘আমি সিমফেরোপল থেকে পরের স্টপেজের উদ্দেশে ট্রেনে চড়েছিলাম। তার আগে কাছের একটি দোকানের ফিটিং রুমে জামাকাপড় বদলে নেই। আমার সহকর্মী আমার পোশাক পরেছিলেন, কারণ যারা আমাকে অনুসরণ করছিল, তারা আমাকে পোশাকে চিনত। সে ওই পোশাকে আমার গাড়িতে উঠেছিল। আর আমি তার পোশাক পরে ফিটিং রুম থেকে বেরিয়ে আসি।’

আকায়েভ ও তার পরিবারের পাশপাশি ২০১৪ সাল থেকে ক্রিমিয়া থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ৩০ হাজার ক্রিমিয়ান তাতারের জন্য এটি সেই নির্বাসনেরই পুনরাবৃত্তি।

আকায়েভ বলেন, ‘ঈশ্বর বলেছেন তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে, যারা তোমাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমার জন্য এটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রেরণা। আমাদের অবশ্যই ক্রিমিয়ায় ফিরে যেতে হবে। আমরা ফিরে যাবই।’

ক্রিমিয়া ছাড়ার কিছু পর আকায়েভ ডনবাসে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষে লড়াই করার জন্য মুসলিম যোদ্ধাদের নিয়ে একটি ছোট দল গঠনে সাহায্য করেন।

ক্রিমিয়া স্কোয়াড

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার শুরুতে আকায়েভ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন যাতে তাকে দেখা যায় মুখোশ পরা অবস্থায় সশস্ত্র কমরেডদের মাঝে দাঁড়িয়ে। এ যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ না করার জন্য মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান আকায়েভ। যারা রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে অনেক জমি আছে, সবাইকে কবর দেয়ার জন্য যা যথেষ্ট।’

রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রার আক্রমণের শুরুতে আকায়েভের বিচ্ছিন্ন দলে প্রায় ১৫ জন যোদ্ধা ছিল। এখন প্রায় ৫০ জন মুসলিম ক্রিমিয়ান তাতার যোদ্ধা রয়েছে তার দলে।

আকায়েভ বলেন, ‘আমরা মূলত পুনর্জাগরণের কাজ করি। সদ্য মুক্ত অঞ্চলগুলোতে স্কাউট এবং চেকপয়েন্ট পরিচালনা করি।’

মার্চের শেষ দিকে রাশিয়ান বাহিনী কিয়েভের চারপাশ থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে তার দলের সদস্যরা মোটিজিন গ্রামে প্রবেশ করে। সেখানে তারা সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখেছে। গণকবর আবিষ্কার করেছে তারা।

আকায়েভ বলেন, ‘জঙ্গলে হাঁটতে গিয়ে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা এটি উদঘাটন করে। একজন যোদ্ধার তখন লক্ষ্য করে একটি হাত মাটি থেকে বেরিয়ে এসেছে। পা দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করার পর মরদেহ দেখতে পেয়েছিল আরেকজন। পরে আরও অনেক মরদেহের সন্ধান পাই।’

ইসমাগিলভের বয়স ৪৩। রাজধানী কিয়েভ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বুচারের বাসিন্দা তিনি। শহরটির আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে রুশ সেনাদের বর্বরতার চিহ্ন। ২০১৪ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত ডনবাস থেকে সেখানে চলে আসেন ইসমাগিলভ। ওই বছর তার শহর দখলে নেয় দোনেস্ক রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদিরা।

কিয়েভ অঞ্চল থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের পরের দিন ইসমাগিলভ তার অ্যাপার্টমেন্টে ফেরেন। দখলদার সেনারা ভবনটিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে গিয়েছিল।

দীর্ঘ ১৩ বছর ইসমাগিলভ ছিলেন ইউক্রেনের অন্যতম প্রভাবশালী মুসলিম নেতা; দেশের সুন্নি মুসলিম সম্প্রদায়ের ইউক্রেনীয় ‘উম্মার’ মুফতি। মার্চে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি ইউক্রেনের টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স ফোর্সে যোগ দেন।

ট্রাকে করে সংঘাতময় ডনবাসে চিকিৎসকদের আনা-নেয়া এবং আহতদের সরিয়ে নেয়ায় নিজেকে নিযুক্ত করেছেন ইসমাগিলভ।

তিনি বলেন, ‘সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল থেকে দূরে কোথাও প্রার্থনায় চোখ বন্ধ করে থাকার চেয়ে অসহায়দের সেবা করাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে আমার কাছে।’

অনলাইন ভিডিওতে পুতিনের ‘অন্যায় আগ্রাসনের’ নিন্দা জানানোর জন্য বিশ্বের মুসলমানদের কাছে আবেদন করেছেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, ‘ইউক্রেনকে সমর্থন করুন, তহবিল দিয়ে সমর্থন করুন, তথ্য দিয়ে সমর্থন করুন, সামরিকভাবে সমর্থন করুন।’

নিপীড়ন সব ক্রিমিয়ান তাতার পরিবারকে স্পর্শ করেছে

আকায়েভের মতো ইসমাইল রামাজানভের ক্ষেত্রেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধটি শুরু হয়ে গিয়েছিল রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করার পর।

৩৬ বছরের ইসমাইল বলেন, ‘বড় মাতৃভূমিকে রক্ষা করার জন্য আমরা ছোট মাতৃভূমি ছেড়েছি। আমি জানি একটি মুক্ত ইউক্রেন ছাড়া মুক্ত ক্রিমিয়া থাকবে না।’

রামাজানভ কিয়েভের কেন্দ্রে একটি ক্যাফেতে তার বন্ধু আনা ইসমন্তের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ক্রিমিয়ান তাতার পেস্ট্রি এবং চা খাচ্ছিলেন।

তিনি জানান, কীভাবে একজন কর্মী এবং সাংবাদিক হিসেবে তিনি ক্রিমিয়ার রাজনৈতিক বন্দিদের দুর্দশার বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। গোপনে রাশিয়ান বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারদের জামিনের অর্থ সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ফ্ল্যাশ মব আয়োজন করে থাকেন তিনি।

বেশিদিন নিজেকে আড়ালে রাখতে পারেননি রামাজানভ। ২০১৮ সালের জানুয়ারির এক ভোরে রুশ ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) এজেন্টরা রামাজানভকে তার বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে একটি সাদা ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন তাকে ভীষণ পেটানো হয়। বিচারের অপেক্ষায় তাকে ছয় মাস জেলে কাটাতে হয়েছে।

রামাজানভ বলেন, ‘এফএসবি এজেন্টরা আমার বাড়িতে পিস্তলের কার্তুজ এবং চরমপন্থি বই রেখে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। স্বাধীন কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করার জন্য আমার বিচার করতে চেয়ছিল।’

আনা ইসমন্ট ইউক্রেনীয় সৈন্যদের জন্য পণ্য সংগ্রহ এবং তহবিল সংগ্রহ করছেন। ছবি: আল জাজিরা

খারকিভ হিউম্যান রাইটস প্রোটেকশন গ্রুপের মতে, এ ধরনের কৌশলগুলো রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের সমালোচনার একটি সাধারণ প্রতিক্রিয়া। দখলের পর অপহরণের ঘটনা নিয়মিত হয়ে ওঠে। কাউকে চুপ করানোর জন্য পুরো পরিবারকে হয়রানি করা হয়েছে, ভয় দেখানো হয়েছে। ২০২২ সালের মে পর্যন্ত ১২৩ জন নথিভুক্ত ক্রিমিয়ান রাজনৈতিক বন্দি ছিল। এদের ৯৮ জনই ক্রিমিয়ান তাতার।

রামাজানভ বলেন, ‘এমন কোনো ক্রিমিয়ান তাতার পরিবার নেই, যাকে রুশ দমন-পীড়ন স্পর্শ করেনি।’

আইনে সামান্য পরিবর্তনের ফলে রামাজানভের আইনজীবীরা শেষ পর্যন্ত তার গ্রেপ্তারের এক বছর পর তার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে পারেন। এরপর তিনি ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে চলে যান।

সেনাদের জন্য ড্রোন সোর্সিং

ইসমন্তও যুদ্ধে যোগ দিয়েছে। ২৬ বছর বয়সী লাজুক প্রকৃতির ইসমন্ত হিজাব পরে পণ্য সরবরাহ এবং তহবিল সংগ্রহ করেন। ১৮ বছর বয়সে ময়দান রেভ্যুলেশনের সময় থেকেই তিনি একজন কর্মী।

ইউক্রেনভিত্তিক সাহায্য সংস্থা অ্যানোমালির মাধ্যমে কাজ করেন তিনি। সক্রিয়ভাবে চিকিৎসা সরবরাহ, যানবাহন, খাদ্য, ড্রোন, থার্মাল ইমেজিং ডিভাইস এবং সেনাদের জন্য সরঞ্জাম সংগ্রহ করে থাকেন এ তরুণী।

ইসমন্ত বলেন, ‘চেরনিহিভের সেনাদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার কিট পাঠিয়েছিলাম। যখন আমি কিটের সঙ্গে তাদের ছবি দেখেছিলাম, তখন মনে হয়েছিল আমিও তাদের অংশ।’

ময়দান রেভ্যুলেশনের সময় সহকর্মীদের মতো ইসমন্তও ইউক্রেনের ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তনে আগ্রহী ছিলেন। সে সময় তার এক ঘনিষ্ঠ মুসলিম বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল, যিনি পরে ডনবাসে যুদ্ধে মারা যান। গত বছর ইসলামে ধর্মান্তরিত হন ইসমন্ত।

ময়দানে সহিংসতা যখন চরম পর্যায়ে, তখন তার বন্ধু তাকে ‘কিছু’ সংগ্রহ করতে স্কোয়ার থেকে অনেক দূরে পাঠিয়েছিলেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন, বন্ধু তাকে বিপদ থেকে দূরে রাখতে চেয়েছেন।

শৈশবের বেশিরভাগ সময় ক্রিমিয়াতে কাটলেও এটি দখল হয়ে যাওয়ার পর ক্রিমিয়ান তাতার পরিবারগুলোকে সমর্থন করার জন্য ক্রিমিয়ান তাতার সংস্কৃতিতে নিমজ্জিত হয়েছিলেন ইসমন্ত।

তিনি বলেন, ‘আমি ক্রিমিয়ার বেশ কয়েকটি পরিবারকে কিয়েভের জীবনযাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করেছি।’

এই ধরনের একটি কোর্সের মাধ্যমেই তার দেখা হয়েছিল রামাজানভের সঙ্গে। সক্রিয়তা এবং স্বেচ্ছাসেবক কাজের মাধ্যমে দুজনের একটি দৃঢ় বন্ধন তৈরি হয়।

ইসমন্ত এবং রামাজানভ তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া পোস্টগুলোতে অনুদানের জন্য ঘন ঘন আবেদন করে থাকেন। ইদানিং তাদের ঝোঁক ড্রোন সরবরাহের দিকে, যা যুদ্ধক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এখন অবধি আনা খেরসন, মাইকোলাইভ, জাপোরিজিয়া, ইজিয়াম এবং এর আগে মারিউপোলের আশেপাশের ব্যাটালিয়নে ড্রোন পাঠিয়েছেন তারা।

যারা ফিরে এসেছে

ক্রিমিয়ায় রুশ শাসন এবং পরবর্তীতে সোভিয়েত শাসনে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের ফলে এ উপদ্বীপের রূশ রূপান্তর ঘটে। নির্বাসনে পাঠিয়ে ক্রিমিয়ান তাতারদের বাড়িগুলোকে খালি করিয়েছিল রুশ অভিবাসীরা। জাতিগত রুশরা এখনও সেখানে সবচেয়ে বড় জনগোষ্ঠী। তারপর যথাক্রমে ইউক্রেনীয় এবং ক্রিমিয়ান তাতাররা, যারা মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের কিছু বেশি।

সোভিয়েত নিপীড়নের স্মৃতি এখনও অনেক ক্রিমিয়ান তাতারকে তাড়া করে। স্তালিনের যৌথ শাস্তির পর পুতিনের অধীনে নিপীড়নের ইতিহাস একটি নতুন অধ্যায় মাত্র।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর জন্মগ্রহণকারী অল্পবয়সী ক্রিমিয়ান তাতারদের কাছে সেই ক্ষত এখনও কাঁচা। নির্বাসিত চেচেন সম্প্রদায়গুলোকে চেচনিয়া ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হলেও ক্রিমিয়ান তাতারদের তাদের নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি ৪৫ বছরেও।

ইসমাইল কার্ট-উমের ১৯৯১ সালে ক্রিমিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি বেড়ে ওঠেন প্রাচীন খানাতের রাজধানী বাখচিসারাইতে।

অনেকের মতো কার্ট-উমের কাছে জন্মভূমিতে প্রত্যাবর্তন শক্ত চ্যালেঞ্জের। তাদের জন্মভূমিতে বিদেশিরা আবাস গেড়েছে। এসব বিদেশিদের কাছে তারা এখন বিশ্বাসঘাতক।

কার্ট-উমার বলেন, ‘অন্যান্য ক্রিমিয়ান আমাদের প্রত্যাবর্তনকারীদের প্রতি খুব বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করতে পারে। অনেকেই আমাদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে দেখে।’

ইসমাইল কার্ট-উমেরের সামরিক জোটে গায়ক হিসেবে ভূমিকা সেনাদের মনোবল চাঙা রাখতে সাহায্য করছে। ছবি: আল জাজিরা

কার্ট-উমের এমন এক সময়ে জন্মগ্রহণ করেন, যখন সমাজ থেকে কুসংস্কার ধীরে ধীরে বিদায় নিচ্ছে। প্রবাসের কষ্টের গল্প শুনে বড় হয়েছেন তিনি।

কার্ট-উমের দাদা সোভিয়েত রেড আর্মির সদস্য ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশিরভাগ সময় যুদ্ধক্ষেত্রে কেটেছে তার। যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফেরার পর ক্রিমিয়া ছাড়ার জন্য তাকে মাত্র তিন দিন সময় দিয়েছিল সোভিয়েত সরকার। কার্ট-উমেরের বাবাকে আফগানিস্তান যুদ্ধে পাঠিয়েছিল সোভিয়েত শাসকরা।

২০১৪ সালে কার্ট-উমর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ক্লাসিক্যাল মিউজিকের প্রশিক্ষিত গায়ক হিসেবে।

কার্ট-উমার বলেন, ‘প্রত্যেকেরই এখন কর্তব্য আছে। আমার বন্দুক নাও থাকতে পারে। তবে আমি অন্যভাবে অবদান রাখি।’

ক্রিমিয়া এবং ইউক্রেনের জন্য গান

ইসমন্তের মতো কার্ট-উমেরও জন্ম ময়দান রেভ্যুলেশনের সময়ে। বেশ কয়েক বছর তিনি ওই বিদ্রোহের স্মরণে অনুষ্ঠানগুলোতে গান গেয়েছেন।

ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে কার্ট-উমের বিভিন্ন জায়গায় তার ব্যান্ডের সঙ্গে ভ্রমণ এবং পারফর্ম করছেন। তিনি তার ভূমিকাকে মনোবল গড়ে তোলা এবং মানুষের হৃদয়ে ইউক্রেনীয় জাতিয়তার বোধ জাগানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখেন।

গানের আসরে কার্ট-উমেরকে একজন ক্রিমিয়ান তাতার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এতে তিনি ও তার দল যে অভ্যর্থনা পান, তাতে তারা অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হন।

স্বাধীনতার যুদ্ধ

ইউক্রেনের ধর্মীয় সহনশীলতা ও উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতি দেশটিতে বসবাসরত মুসলিমদের আকৃষ্ট করেছে। দেশপ্রেমবোধ তাদের মধ্যে অনেক তীব্র।

আকায়েভ বলেন, ‘ইউক্রেন এমন একটি দেশ, যেটি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে।’

ক্রিমিয়ান তাতার এবং অন্যান্য যারা রাশিয়ান সাম্রাজ্যবাদের শিকার হয়েছে, তারা এই যুদ্ধের ঝুঁকি জানে।

ইসমাগিলভ বলেন, ‘মুসলিমরা ভাল করেই জানে রাশিয়া তাদের ভূখণ্ড (ইউক্রেন) দখলে নিলে কী ঘটবে। এটি রাশিয়া-অধিকৃত ক্রিমিয়ার মতোই হবে, যেখানে মুসলমানদের গুম করা হয়, জেলে পুরে রাখা হয়।’

খাদজালির জ্যাকেটের চিহ্ন তাকে একজন স্বেচ্ছাসেবক ইমাম হিসেবে চিহ্নিত করে। ওপরের লেখাটি ‘ইমাম চ্যাপলিন’, নীচে ‘ইউক্রেন’ লেখা। ছবি: আল জাজিরা

খাদজালি এবং অন্যদের জন্য যুদ্ধ হচ্ছে ঐক্যবদ্ধ সমাজের প্রতীক। ইসমন্ত বলেন, ‘একসঙ্গে থাকলেই আপনি জিততে পারবেন, বেঁচে থাকতে পারবেন। আমাদের ইউক্রেনীয়দের এই অভাব ছিল। একটি জাতি হিসেবে আমরা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সূচনার মাধ্যমে তা উপলব্ধি করেছি। আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ।’

এ বিভাগের আরো খবর