চীনের হুমকি উপেক্ষা করেই তাইওয়ান পৌঁছালেন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। আর তার সঙ্গে দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপরাষ্ট্রে ঢুকে পড়েছে আমেরিকার যুদ্ধবিমানের বহর। বলা হচ্ছে, পেলোসির নিরাপত্তার খাতিরে এ ব্যবস্থা।
মালয়েশিয়া থেকে মঙ্গলবার রাতে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেইয়ের উদ্দেশে যাত্রা করেন পেলোসি। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। তাদের নিরাপত্তা দিতে জাপানের বিমানঘাঁটি থেকে উড়ে আসে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর ১৩টি ফাইটার জেটের একটি স্কোয়াড্রন।
স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে তাইপেইয়ে বিমানবন্দরে নামেন পেলোসি। এ সময় পুরো বিমানবন্দরের আলো বন্ধ করে দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের দূতকে টর্চের আলোয় স্বাগত জানান তাইওয়ান কর্মকর্তারা।
পেন্টাগন বলছে, সম্ভাব্য চীনা হামলা থেকে হাউস স্পিকারকে রক্ষা করার জন্যই এ পদক্ষেপ।
এদিকে, চীনা সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করছে তাদের জেট বিমান। বলা হচ্ছে, এগুলো সু-৩৫ যুদ্ধবিমান।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইয়ং মঙ্গলবারও পেলোসির সফর নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। জানিয়েছিলেন, এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে চড়া মূল্য দিতে হবে।
১৯৯৭ সালের পর এ প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক তাইওয়ান সফর করছেন। আর এতেই চটেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে জানিয়েছিল, সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে তারা। এক ধাপ এগিয়ে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যান কেফেই তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। পেলোসির তাইওয়ান সফর প্রশ্নে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের সেনারা চুপ করে বসে থাকবে না।’
এমন পরিস্থিতিতে পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কূটনৈতিক এবং সামরিক দিক থেকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।
কেবল আকাশপথ নয়, পেলোসির সফরের আগে তাইওয়ানের জলসীমার কাছে পৌঁছে যায় যুক্তরাষ্ট্রের চারটি যুদ্ধজাহাজ। যার মধ্যে আছে, বিশ্বের অন্যতম বড় বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস রোনাল্ড র্যাগন।
সেই সঙ্গে মিসাইলবাহী ক্রুজার ইউএসএস অ্যান্টিয়েটাম, ডেস্ট্রয়ার গোত্রের রণতরী ইউএসএস হিগিন্স এবং দ্রুত সেনা অবতরণের উপযোগী রণতরী ইউএসএস ত্রিপোলিও দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থান নিয়েছে।