পাকিস্তান ও ইরানে টানা বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণ গেছে অনেকের। কয়েক দিনের এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে মারা গেছে ১৩৬ জন, আর ইরানে মারা গেছে ৬৯ জন।
দুই দেশের কর্তৃপক্ষই উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে অনুকূল পরিবেশে উদ্ধার কার্যক্রমে বেগ পেতে হচ্ছে।
পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বেলুচিস্তানে টানা বৃষ্টি ও বন্যায় ১৩৬ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে সংবাদমাধ্যম জিও টিভি।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এতে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও বন্যায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৭ জনই শিশু। এ ছাড়া নারী ৩৩ জন, আর পুরুষ ৫৬ জন।
বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণের নির্দেশ দেন তিনি।
বেলুচিস্তানে সৃষ্ট এমন পরিস্থিতিতে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তবে বন্যায় বিস্তৃত অঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্যাকবলিত অবস্থায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। এখন পর্যন্ত ৭০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (পিডিএমএ) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃষ্টিতে ১৩ হাজার ৫৩৫টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে ৩ হাজার ৪০৬টি ঘরবাড়ি। টানা বৃষ্টিতে ১৬টি সেতু এবং ৬৪০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পিডিএমএ জানিয়েছে, বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ২০ হাজারের বেশি গবাদিপশুর। বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আটটি। ১ লাখ ৯৮ হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
গত তিন দিনের মধ্যে দুবার প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটা পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।
সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্ধার অভিযানে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বেলুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র ফারাহ আজিম শাহ।
এদিকে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা ইরানের বন্যা ও ভূমিধসে ৬৯ জনের প্রাণহানির তথ্য দিয়েছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির ৩১টি প্রদেশের মধ্যে ২৪টিই বন্যায় কবলিত। এসব এলাকার অন্তত ৪৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি।
উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।