এম্পায়ার স্টেটের চেয়েও লম্বা ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। ৭৫ মাইলজুড়ে কাচের আকাশচুম্বী ভবনটি নির্মাণে খরচ হবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার। সৌদি সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমান ‘মিরর লাইন’ নামের এ পরিকল্পনা উন্মোচন করেছেন।
যুবরাজ সালমান তার দেশে মিসরের পিরামিডের মতো আইকনিক এবং কালজয়ী নির্মাণ প্রকল্প স্থাপন করতে চাইছেন অনেক আগেই। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রকল্পটি সভ্যতাগত বিপ্লব। এটি মানুষকে এগিয়ে নেবে।’
বিশাল ভবনটি মরুর বুকে নির্মিত স্বপ্নের নিওম সিটির অংশ হবে; যার আকৃতি হবে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের কাছাকাছি। মোহাম্মদ বিন সালমান ২০২১ সালের জানুয়ারিতে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মিরর লাইনের নির্মাণ শেষ করতে চান তিনি। যদিও প্রকৌশলীরা বলছেন, এটি নির্মাণে অন্তত ৫০ বছর সময় লাগতে পারে।
দুটি ১ হাজার ৬০০ ফুট লম্বা ভবন নিয়ে নির্মাণ হবে মিরর লাইন। দুটি ভবন মরু, উপকূল এবং পাহাড়ের পাদদেশ মিলে ৭৫ মাইল এলাকায় একে অন্যের সঙ্গে সমান্তরালভাবে থাকবে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, নির্মাণ পুরোপুরি শেষ হলে আকাবা উপসাগর থেকে আকাশচুম্বী ভবনটি পর্বতমালার মধ্য দিয়ে যাবে। তারপর উপকূল বরাবর একটি মরুভূমিতে প্রসারিত হবে।
সালমান আরও বলেছিলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ১০ লাখ বাসিন্দা যেন মাত্র ৫ মিনিটে হেঁটে একে অন্যের সঙ্গে দেখা করতে পারে। ২০ মিনিটে ভবনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। ভবনের জ্বালানি সরবরাহ হবে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিতে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল অনুসারে, ট্রিলিয়ন ডলারের প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পর ৫০ লাখ মানুষ এখানে বাস করতে পারবে। ভবনগুলোর নিচে দ্রুতগতির ট্রেন চলবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভবনের ভেতর থাকবে চাষাবাদের ব্যবস্থা।
যুবরাজ সালমান জোর দিয়ে বলেছেন, ভবনগুলো সম্পূর্ণ কার্বন নিরপেক্ষ এবং স্থানীয় পরিবেশের জন্য উপযুক্ত হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মরুর জীবনযাপন কেবল গরম, আঠালো এবং বালুময় থাকবে না। কেননা মাটি থেকে এক হাজার ফুট ওপরে নির্মাণ হবে একটি স্টেডিয়াম।
প্রকল্পটি ২০৩০ সাল নাগাদ শেষ হওয়ার কথা। তবে নির্মাতা এবং নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, এত অল্প সময়ে নির্মাণ শেষ করা কঠিন। আদতে প্রকল্পটি ৫০ বছরে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
পরিবেশ পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, মিরর লাইনের নিছক আকার এবং দৈর্ঘ্য পরিযায়ী পাখির চলাচলকে ব্যাহত করবে। সেই সঙ্গে ভবনের আয়না বিভ্রান্ত করতে পারে পাখিদের।