রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো গণহত্যা নিয়ে দেশটির বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলার বিষয়ে আপত্তি প্রশ্নে শুক্রবার রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে)।
এদিন স্থানীয় সময় বেলা ৩টায় দ্য হেগে আন্তর্জাতিক আদালতের প্রেসিডেন্ট জোয়ান ডনাহিউয়ের সভাপতিত্বে পূর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণার করা হবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা মামলায় রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূল করতে রাখাইনে গণহত্যা, গণধর্ষণসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়।
২০২১ সালে ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক সরকার দেশটিতে ক্ষমতা দখলের পর ওই মামলার শুনানি প্রশ্নে আপত্তি জানায়।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ শুরু হয় ১৯৭৮ সাল থেকে। তখন বাংলাদেশে আসা তিন লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে আড়াই লাখকে মিয়ানমার পরে ফিরিয়ে নিয়েছিল। ১৯৯২ সালে আসে দুই লাখ ৫৫ হাজার ৫৫৭ রোহিঙ্গা।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রাখাইনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ২৪টি সীমান্ত চৌকিতে একযোগে হামলা চালানো হয়। শুরু হয় অপরাধী দমনের নামে অভিযান। পরের দিন ২৫ আগস্ট থেকে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। এর পর থেকে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় উখিয়া-টেকনাফে।
প্রায় ১৬ বছর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধ থাকার পর ২০১৭ সালের নভেম্বরে একটি নতুন সমঝোতা স্মারকে একমত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। চুক্তিতে দুই মাসের মাথায় প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো রোহিঙ্গা রাখাইনে ফেরত যেতে পারেনি।
এমন প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে গাম্বিয়া। ক্ষমতা গ্রহণের এক পর্যায়ে এ নিয়ে আপত্তি তোলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
মিয়ানমারের দাবি, গাম্বিয়ার কোনো নাগরিক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় তাদের পক্ষে এমন অভিযোগ তোলার সুযোগ নেই। তবে গাম্বিয়া বলছে, দুই বছর আগেই আদালত গাম্বিয়ার মামলা করার অধিকারের বিষয়টি নিয়ে নিষ্পত্তি করেছে।
চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি এসব অভিযোগ ও মিয়ানমারের দাবি নিয়ে শুনানি শুরু হয় আইসিজেতে। শুনানি হয় মোট চার দিন। এরপর শুক্রবার এ নিয়ে রায় ঘোষণা করা হচ্ছে।