বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাকিস্তানও কি শ্রীলঙ্কার পথে

  •    
  • ২১ জুলাই, ২০২২ ১০:৩২

পাকিস্তান তার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের চেয়ে দ্রুতগতিতে ব্যবহার করছে। এর কারণ করোনাভাইরাস মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বৈদেশিক পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে দেশটি দেউলিয়া হয়ে যাবে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা নজিরবিহীন আর্থিক সংকটে রয়েছে। দেশটিতে জ্বালানির জন্য কয়েক দিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কানদের। খাদ্য ও ওষুধের সংকট চরমে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামর্থ্য নেই পণ্য আমদানিতে চাহিদা মোতাবেক ডলার সরবরাহ করার।

এমন পরিস্থিতিতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেউলিয়া হওয়ার বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে রয়েছে পাকিস্তানসহ ১২টি দেশ।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে এই ১২টি দেশের তালিকা করেছে রয়টার্স। সেই তালিকাতেই রয়েছে পাকিস্তান।

ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্ববাজারে দাম বেড়েছে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও অন্যান্য পণ্যের। জ্বালানি তেল ও রান্না করা তেলের জন্য পাকিস্তান পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। এ ছাড়াও দেশটিতে রপ্তানির তুলনায় আমদানির পরিমাণ ব্যাপক।

ফলে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানির মূল্য পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। যেখানে জানুয়ারিতেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ১৬.৬ বিলিয়ন ডলার, সেখানে বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ৯.৭ বিলিয়ন ডলারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর মাত্র ৫ সপ্তাহ আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে।

দেশটির বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ এতই বেশি হয়ে গেছে যে রাজস্বের ৪০ শতাংশ ব্যয় করতে হচ্ছে বৈদেশিক ঋণের সুদ মেটাতে।

পাকিস্তানের মুদ্রা রুপির দামের রেকর্ড পতন হয়েছে। ১ ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপি দাঁড়িয়েছে ২২৫-এ। রুপির ইতিহাসে ডলারের বিপরীতে এটিই সর্বোচ্চ পতন।

পাকিস্তানে পেট্রোল পাম্পের সামনে বাইকের দীর্ঘ সারি

দ্য কনভারসেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান তার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের চেয়ে দ্রুতগতিতে ব্যবহার করছে। এর কারণ করোনাভাইরাস মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বৈদেশিক পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে দেশটি দেউলিয়া হয়ে যাবে।

এপ্রিলেও দেশটিতে যেখানে ১ লিটার পেট্রলের দাম ছিল ১৫০ রুপি সেখানে জুলাইয়ে পেট্রলের দাম হয়েছে ২৫০ রুপি।

রান্নার জন্য ব্যবহৃত তেল মে থেকে জুনের মধ্যেই দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ।

যতদিন যাচ্ছে, দেশটিতে বাজার পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম।

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল দেউলিয়া হওয়া থেকে দেশকে বাঁচাতে জনগণকে চা পান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তারা গ্রাহকের থেকে যেই পরিমাণ অর্থ নেয় তার থেকেও তাদের খরচ অনেক বেশি। ৮ ঘণ্টা লোডশেডিং দিয়েও পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না। যেখানে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং ১০ ঘণ্টারও বেশি। দেশটি চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না।

পাকিস্তানি পত্রিকা ন্যাশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে বিদ্যুৎ ঘাটতি ৬ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। দৈনিক বিদ্যুৎ চাহিদা ২৮ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট, যেখানে দেশটি উৎপাদন করতে পারছে মাত্র ২২ হাজার ৪৩৫ মেগাওয়াট।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার ইমরান খানের সময় জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতে যেই ভর্তুকি দেয়া হচ্ছিল তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে দেশটিতে জ্বালানির দাম আরও ৭০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর