ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশটিতে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ করতে চায় বলে সোমবার পার্লামেন্টকে জানিয়েছে সরকার।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইন্টারনেট বাজার ভারতে নতুন একটি ডিজিটাল সম্পদ হিসেবে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিষয়গুলোতে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে বলে উল্লেখ করে এমন কথা জানানো হয়েছে।
প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্র্যাঞ্চের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ সোমবার ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ‘একটি দেশের আর্থিক এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার ওপর ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রভাব’ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে এই খাতে একটি সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছেন তিনি।
সীতারমণ বলেন, ‘আইবিআই মনে করে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ করা উচিত।’
সে সঙ্গে তিনি বলেছেন, ক্রিপ্টোর জন্য আইন প্রণয়নে প্রয়োজন হবে ‘উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।’
ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে ভারতের নিম্নকক্ষ লোকসভার সংসদ সদস্য থোলকাপিয়ান থিরুমাবলাভানের একগুচ্ছ প্রশ্নের জবাবে সরকার তাদের পক্ষ থেকে এসব যুক্তি দিয়েছে।
সীতারমণ বলেন, ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির সংজ্ঞা অনুসারে সীমানাহীন এবং নিয়ন্ত্রক সালিশ রোধ করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজন। তাই নিয়ন্ত্রণ বা নিষেধাজ্ঞার জন্য যেকোনো আইন শুধুমাত্র ঝুঁকি ও সুবিধার মূল্যায়ন। সেই সঙ্গে অভিন্ন শ্রেণিবিন্যাস ও মানদণ্ডের বিবর্তনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পরেই এটি কার্যকর থাকতে পারে।’
ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি বোর্ড, রেগুলেটর বডি, ট্রেজারি অফিস এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ ভারতের অন্তত ২০টি অর্থনৈতিক গ্রুপ চলতি মাসের শুরুর দিকে এই বছরের অক্টোবরের মধ্যে একটি শক্তিশালী আইনের প্রস্তাব করে।
সীতারমণের এসব মন্তব্যের পর দেশটিতে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে আরও বড় চ্যালেঞ্জ দেখা যাবে বলে বলছেন অনেকেই।
বছরের শুরুতে ক্রিপ্টো ট্রেডিং সম্পর্কিত কর লেনদেন এবং মুনাফার বিষয়ে ভারতের পদক্ষেপকে ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্রুত বর্ধনশীল নতুন প্রযুক্তিকে স্বাগত জানাতে শুরু করার একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখেছিল। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, ভারতীয় ব্যাংকগুলো শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের ভিন্ন ধরনের সংকেত পাঠায়।
ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান আর্মস্ট্রং, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের ‘অনানুষ্ঠানিক চাপের’ কারণে এই বছরের শুরুতে কয়েনবেস ভারতে ট্রেডিং পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। স্থানীয় কর আইনের কারণে স্থানীয় এক্সচেঞ্জ এবং অন্যান্য ক্রিপ্টো সংস্থাগুলো সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রেডিংয়ের পরিমাণ খুব কমে গেছে।
এর আগে ইন্টারনেট অ্যান্ড মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া, ১৮ বছর বয়সী লবি গ্রুপ ক্রিপ্টোর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ফলে এই খাতে অনেকটাই অনিশ্চিয়তা শুরু হয়। যার সবশেষ প্রতিফলন ভারতের পার্লামেন্টে দেখা গেল।