সার্বিয়া থেকে যাত্রা করার পর গ্রিসে বিধ্বস্ত কার্গো বিমানটি গোলাবারুদ নিয়ে বাংলাদেশে আসছিল।
সার্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী নেবোজসা স্টেফানোভিচ এ তথ্য জানিয়েছেন বলে রোববার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক একাধিক সংবাদমাধ্যম।
মন্ত্রী নেবোজসা বলেছেন, আন্তনভ এএন-১২ বিমানটি সার্বিয়ার তৈরি প্রায় ১১ টন অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছিল। বিধ্বস্ত হওয়ার পর এ বিমানের আট আরোহীর সবাই মারা গেছেন।
জর্ডান, সৌদি আরব ও ভারত হয়ে এই বিমানের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল বলে জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, বিমানের ক্রুদের প্রত্যেকেই ইউক্রেনের। কেউই সার্বিয়ার নন। এর চেয়ে আর বেশি তথ্য নেই আমার কাছে।
স্থানীয় সময় শনিবার রাতে গ্রিসের উত্তরাঞ্চলীয় কাভালা শহরে ওই বিমান বিধ্বস্ত হয় হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
গ্রিসের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইআরটি তাৎক্ষণিকভাবে জানায়, কার্গো বিমানটিতে সব মিলিয়ে ১২ টনের মতো মালামাল ছিল। এই দুর্ঘটনা বিপজ্জনক।
এএফপি বলছে, ইউক্রেনভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের ওই বিমানটির ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেয়ায় পাইলট এটিকে কাভালা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করাতে চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত আর রানওয়েতে যেতে পারেননি তিনি।
নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে বিমানটিকে বিধ্বস্ত হতে দেখা গেছে। দেখা যায়, মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর কার্গোটিতে আগুন ধরে যায়। একপর্যায়ে বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।
বিধ্বস্ত হওয়ার পর আগুন ধরে যায় কার্গো বিমানটিতে। ছবি: ইপিএ
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রাত পৌনে ১১টার দিকে বিকট শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখি বিমানটি আগুনে পুড়ছে। পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে সাতটি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি দুর্ঘটনাস্থলে নেয়া হয়। তবে বিস্ফোরণের কারণে সেখানে গাড়িগুলো পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়।
অস্ত্র ও গোলাবারুদ বহনকারী বিমানটি যে এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে, তার দুই কিলোমিটারের মধ্যে বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সবাইকে ঘর থেকে বাইরে বের না হতে বলা হয়েছে।
রোববার সকালে ধ্বংসস্তূপের স্থানটি পরীক্ষা করতে পাঠানো হয় ড্রোন।
গ্রিসের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, স্থানটি নিরাপদ মনে না হওয়া পর্যন্ত ওই এলাকা পরিদর্শনে যাবে না দেশটির সেনাবাহিনী, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল এবং পরমাণু শক্তি কমিশন।
গ্রিসের থেসালোনিকিতে ইউক্রেনের দূত ভাদিম সাবলুক দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নিহতদের পরিচয় কর্তৃপক্ষকে দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, বিমানটি বাংলাদেশে যাচ্ছিল।
সার্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, দুর্ভাগ্যবশত কিছু সংবাদমাধ্যম অনুমান করেছে, বিমানটি ইউক্রেনের উদ্দেশে অস্ত্র বহন করছিল। কিন্তু এ তথ্য সম্পূর্ণ অসত্য।