বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মস্কোর দুয়ারে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান

  •    
  • ১৭ জুলাই, ২০২২ ১০:৪০

সামরিক অভ্যুত্থানের পরপরই মিয়ানমারজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করা হয়। সে বিক্ষোভ দমনের পর এখন সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু করেছেন বিরোধীরা। এমন বাস্তবতায় রাশিয়ার মতো পরাশক্তির সহায়তা দরকার জান্তা সরকারের।

সামরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার পাশাপাশি পরমাণু শক্তি খাতে সহযোগিতা জোরদার করতে রাশিয়া সফর করেছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্রমে বিচ্ছিন্ন হতে থাকা মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং।

সাম্প্রতিক এ সফরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুর সঙ্গে মিন অং হ্লাইংয়ের বৈঠকের বিষয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেয়া এবং সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতা জোরদারে তারা খোলামেলা আলোচনা করেছেন।’

মিয়ানমারে কারাবন্দি অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতার দখল নেয় সামরিক বাহিনী। সে অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সেনাদের অন্যতম সমর্থকে পরিণত হয় রাশিয়া।

অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় আসা বর্তমান সরকারের আন্তর্জাতিক বৈধতা একেবারে সামান্য। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অভ্যন্তরীণ বিরোধিতা।

সামরিক অভ্যুত্থানের পরপরই মিয়ানমারজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়। সে বিক্ষোভ দমনের পর এখন সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু করেছে বিরোধীরা। এমন বাস্তবতায় রাশিয়ার মতো পরাশক্তির সহায়তা দরকার জান্তা সরকারের।

মিয়ানমারে সেনাশাসিত সরকারকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি রাশিয়া। এমনকি দেশটিতে উৎখাত হওয়া গণতান্ত্রিক সরকারের দূতের আসন জাতিসংঘে বহাল রাখার বিষয়েও সম্মত হয়েছে মস্কো।

অভ্যুত্থানের পর বেশ কয়েকবার রাশিয়া সফর করেছেন মিন অং হ্লাইং। সে তুলনায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে খুব বেশি দেখা যায়নি তাকে, তবে পশ্চিমা অনেক দেশ যখন মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর অবরোধ আরোপ করছে, তখন রাশিয়া ও চীন জান্তা সরকারকে অস্ত্র দেয়া অব্যাহত রেখেছে।

এ বিষয়ে মিয়ানমারে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা প্রগ্রেসিভ ভয়েসের চেয়ারপারসন খিন ওহমার বলেন, ‘পুতিন সরকার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে সহায়তার পাশাপাশি তাতে উৎসাহ জোগাচ্ছে, যে অপরাধ দায়মুক্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত সংঘটিত হচ্ছে।’

মিয়ানমারকে দেয়া রাশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন হলো বিমান বাহিনীকে সহায়তা। রাশিয়ায় যাওয়া প্রতিনিধিদলে ছিলেন মিয়ানমার বিমান বাহিনীর প্রধানও।

নবগঠিত অভ্যুত্থানবিরোধী সশস্ত্র সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (পিডিএফ) প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়েছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। পাশাপাশি কয়েক দশক ধরে স্বায়ত্তশাসন চাওয়া বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠনগুলোও লড়ছে সেনাবাহিনীর সঙ্গে।

অভ্যুত্থানের পর থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে এসব সংগঠনের বড় কিছু জয় অনেক বিশ্লেষককে বিস্মিত করেছে, তবে এ সংগঠনগুলোর হাতে নেই যুদ্ধবিমান। সে সুযোগে আকাশসীমায় দাপট চালাচ্ছে সামরিক বাহিনী।

এ বিষয়ে ব্যাংককভিত্তিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অ্যান্থনি ডেভিস বলেন, বর্তমানে সামরিক বাহিনীর বিদ্রোহ দমন অভিযান মূলত নির্ভর করছে রাশিয়া ও সোভিয়েত আমলের বিমানের ওপর। এসব বিমানকে কাজে লাগিয়ে হামলা, সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখা, উদ্ধার ও সেনা পরিবহন করছে মিয়ানমার।

তিনি বলেন, ‘খুচরা যন্ত্রাংশ, বিমান থেকে ছোড়া বিদেশি অস্ত্র এবং কিছু ক্ষেত্রে সামরিক সহায়তার নির্ভরযোগ্য জোগান ছাড়া শিগগিরই মারাত্মক সমস্যায় পড়ত (মিয়ানমারের) বিমান বাহিনী।’

এ বিভাগের আরো খবর