ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিজস্ব অর্থনৈতিক সমস্যা এবং ব্রাসেলসে অন্তর্দ্বন্দ্বের উদ্বেগের ফল ভুগতে যাচ্ছে ইউক্রেন। ব্লকের প্রতিশ্রুত তহবিলগুলো এসব জটিলতায় আটকে গেছে বলে শুক্রবার প্রতিবেদন ছেপেছে ব্লুমবার্গ।
গত মার্চে ইউরোপীয় কমিশন ইউক্রেনের জন্য ৯ বিলিয়ন ইউরো ঋণের প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে এ পর্যন্ত ব্লকটি কেবল ১ বিলিয়ন ইউরোর সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, কিয়েভকে ঋণ দেয়ার পরিবর্তে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মাধ্যমে অফেরতযোগ্য অনুদান দেয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল জার্মানি।
জার্মান এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় ঋণের নিশ্চয়তা দেয়ার ধাক্কা বহন করতে চায় না বার্লিন। ব্লকের বাকি দেশগুলোকেও ইউক্রেনে অর্থায়ন কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ঋণও আটকে আছে নিশ্চয়তার শঙ্কায়।
ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে বিশ্বের অন্য সব অঞ্চলের মতো লড়াই করছে ইউরোপ। নিষেধাজ্ঞা এবং উত্তেজনার জেরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে রাশিয়া, এমন আশঙ্কা ঘিরে ধরেছে ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানিকে। কারণ রুশ গ্যাস না পেলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে বার্লিন, যা পঙ্গু করে দিতে পারে তাদের অর্থনীতিকে।
জার্মান সরকার বারবার সতর্ক করছে যে, এ ধরনের পরিস্থিতি বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বাড়িয়ে দেবে। দেশটির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক গত মাসে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “জ্বালানি ঘাটতি কিছু শিল্পের জন্য ‘বিপর্যয়কর’ হবে।
স্বস্তিতে নেই হাঙ্গেরিও। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান শুক্রবার একই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ‘ইউরোপীয় অর্থনীতির ফুসফুসে গুলি করা হয়েছে। এটি এখন বাতাসের জন্য হাঁপাচ্ছে।”
ব্লুমবার্গ বলছে, মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের এক-তৃতীয়াংশ সতর্ক করেছে যে, ‘কিয়েভের প্রতি সমর্থনের জের টানতে হবে ব্লকের দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে।’
ইইউর এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ব্লকের অর্থনীতি কমিশনার পাওলো জেন্টিলোনি রুদ্ধদ্বার এক বৈঠকে সহকর্মীদের বলেছিলেন, ‘ইউরোপীয়দের মধ্যে ক্লান্তির ঝুঁকি এড়াতে সরকারগুলোর এগিয়ে আসা প্রয়োজন।’
ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর পর ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গত মাসে গ্রুপ অফ সেভেন (জি-৭) জানিয়েছিল, কিয়েভকে যতদিন সময় লাগে ততদিন সমর্থন দেবে তারা। এই গ্রুপে জার্মানিও আছে।