বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কার্বন নিঃসরণ রোধে অস্ট্রেলিয়ায় বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ

  •    
  • ৭ জুলাই, ২০২২ ২২:৩০

অস্ট্রেলিয়ানরা এখন বিদ্যুতের জন্য বছরে গড়ে ১ হাজার ৬০০ ডলার; প্রতি তিন মাসে ৪০০ ডলার দিচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দাম ১০৩ শতাংশ বাড়লে বছরে তা দাঁড়াবে ৩ হাজার ২৪৮ ডলারে।

২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুণ হতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায়। কার্বন নিঃসরণ কমাতে সরকারের বিশেষ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাড়তি টাকা গুনতে হবে অস্ট্রেলীয় পরিবারগুলোকে। ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামাতে চাইছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। দ্য ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

দ্য ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বলছে, এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলস, ভিক্টোরিয়া এবং কুইন্সল্যান্ডে ছয়টি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হলে গ্রাহকদের বছরে গড়ে ৩ হাজার ২৪৮ ডলার বিল দিতে হবে।

সাশ্রয়ী মূল্যের বেসলোড পাওয়ারের অভাবে আট বছরের মধ্যে পাইকারি বিদ্যুতের দাম চার গুণ হয়ে যাবে। ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে খুচরা দাম হবে দ্বিগুণ, পাইকারি মূল্য ১০৩ শতাংশ বাড়বে; যা বিদ্যুৎ বিলের এক-তৃতীয়াংশ।

অস্ট্রেলিয়ানরা এখন বিদ্যুতের জন্য বছরে গড়ে ১ হাজার ৬০০ ডলার; প্রতি তিন মাসে ৪০০ ডলার দিচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দাম ১০৩ শতাংশ বাড়লে বছরে তা দাঁড়াবে ৩ হাজার ২৪৮ ডলারে।

পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্টস ইনস্টিটিউট আইপিএ আশঙ্কা করেছিল, ইয়ালোর্ন ডব্লিউ, ইরারিং, বেসওয়াটার, লিডেল, ভ্যালস পয়েন্ট বি এবং কলাইড বি প্ল্যান্টের বিলুপ্তিতে ১১ গিগাওয়াট বা ১১ বিলিয়ন ওয়াট উত্পাদনক্ষমতা হারাবে অস্ট্রেলিয়া।

এই ছয়টি কেন্দ্র ন্যাশনাল এনার্জি মার্কেটের মোট চাহিদার ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এগুলো যথাক্রমে ২০২৮, ২০২৫, ২০৩০, ২০২৩, ২০২৯ এবং ২০২৮ সালে বন্ধ হওয়ার কথা রয়েছে।

এই কেন্দ্রগুলো বন্ধ করার ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতীয় পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৩১০ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হয়েছিল।

আইপিএ প্রতিবেদনের লেখক কেভিন ইউ এবং ড্যানিয়েল ওয়াইল্ড বলছেন, ‘পরবর্তী দশকে নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যের প্রতিস্থাপন বেসলোড পাওয়ার সাপ্লাই সুবিধার অভাবে ভুগবে গ্রাহকরা। তারা বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুণেরও বেশি দেখতে পারে।’

২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৪৩ শতাংশ কমানো হবে বলে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ গত সপ্তাহে জাতিসংঘের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার পূর্বসূরি স্কট মরিসনের লিবারেল পার্টি এই সময়ের মধ্যে ২৬ থেকে ২৮ শতাংশ কমানোর কথা জানিয়েছিল। তবে দুই পক্ষই ২০৫০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা শূন্যে নামাতে বদ্ধপরিকর ছিল।

আইপিএ বলছে, ‘২০৫০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অস্ট্রেলিয়ার জ্বালানি-নির্ভরতায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।’

নতুন নীতিতে পেট্রল গাড়ি পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৈদ্যুতিক গাড়িগুলো গ্রিডের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। গত বছর ইলেকট্রিক গাড়ির বাজার শেয়ার ছিল মাইনাস ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

অস্ট্রেলিয়ায় বৈদ্যুতিক গাড়ির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অরিজিন এনার্জি এবং অস্ট্রেলিয়ান রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সি বলছে, পিক সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বাড়তে পারে ইভি রিচার্জিংয়ের ফলে। প্রতিবেদনে তাই ইভি মালিকদের পিক টাইমের বাইরে রিচার্জে উৎসাহিত করতে আর্থিক প্রণোদনার সুপারিশ করা হয়েছে।

২০১৫ সালে তাসমানিয়া অস্ট্রেলিয়ার প্রথম রাজ্য হয়ে ওঠে, যেটি বিস্তীর্ণ বন থাকার কারণে শূন্য কার্বন নিঃসরণের স্বীকৃতি অর্জন করে। তা সত্ত্বেও আইপিএর পূর্বাভাস বলছে, দ্বীপ রাজ্যের গড় বিদ্যুতের বিল বছরে ১২৫ শতাংশ বেড়ে সাড়ে ৪ হাজার ডলারে পৌঁছাবে; যা ২০৩০ সালের জন্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল ভবিষ্যদ্বাণী।

মূল ভূখণ্ডের অন্য রাজ্যগুলোতেও বিদ্যুৎ বিল দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী উচ্চ গড় বার্ষিক বিল ৩ হাজার ২০০ ডলার হবে। নিউ সাউথ ওয়েলসে ২ হাজার ৬০০ এবং কুইন্সল্যান্ড ও ভিক্টোরিয়া হবে ২ হাজার ৫০০ ডলার।

কয়লাচালিত পাওয়ার স্টেশনগুলো চলতি বছর দুর্বল হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে থাকায় এসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের আর আপগ্রেড করতে চাইছে না।

অস্ট্রেলিয়ান এনার্জি মার্কেট অপারেটর (এইএমও) বলছে, এর ফলে পাইকারি বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে; মার্চ পর্যন্ত বেড়েছে ১৪১ শতাংশ। এ অবস্থায় খুচরা বিক্রেতারা ১ জুলাই থেকে অন্য সরবরাহকারী খোঁজার পরামর্শ দিচ্ছে গ্রাহকদের।

কনজিউমার গ্রুপ- ওয়ান বিগ সুইচের ক্যাম্পেইন ডিরেক্টর জোয়েল গিবসন বলেছেন, গ্রাহকদের ২৮৫ শতাংশ বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছে ডিসকভার এনার্জি।

তিনি বলেন, ‘কয়েক লাখ পরিবারকে শিগগিরই সরবরাহকারী বদলাতে হবে। নইলে বিদ্যুৎ বিল ৫০ শতাংশ থেকে ২৮৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর