পশ্চিমা হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ফলে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে থাকে বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ। রাশিয়াও পাল্টা পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইউরোপের রুশ গ্যাসনির্ভরতাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এরই মধ্যে পোল্যান্ড, বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে গ্যাজপ্রম।
প্রযুক্তিগত ত্রুটির দোহাই দিয়ে জার্মানিতেও গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে রুশ কৌশলগত শ্বাসরোধের প্রচেষ্টার কারণে জার্মানিতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। ফলে বেড়েছে দ্রব্যমূল্যের দাম।
এ ছাড়া শীতপ্রধান দেশ জার্মানিতে শীতকালে প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় শুধু বাসা ও অফিসগুলো গরম রাখার জন্য হিটার চালাতে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটির রাজনীতিবিদ ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এরই মধ্যে সতর্ক করে জানিয়েছেন, আসন্ন শীতের মৌসুমের আগে জ্বালানি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের শুরুতে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ পরিস্থিতিকে একটি টাইম বোমার সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, যদি হঠাৎ করে এই শীতে ঘর গরম করার বিল কয়েক শ ইউরো বেড়ে যায়, তবে তা এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে যে সত্যিই অনেক লোক মোকাবেলা করতে পারবে না।
দেশটির অর্থমন্ত্রী রোবার্ট হাবেক এই সংকটকে স্মরণকালের অন্যতম আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘রাশিয়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম কাঁচামাল গ্যাস রপ্তানি কমিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ফের সচল করার উদ্যোগ নিয়েছে তারা।’
বার্লিনে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি জার্মানদের একসঙ্গে থাকতে অনুরোধ করেছেন এবং ট্রেড ইউনিয়ন, নিয়োগকর্তা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও শিক্ষাবিদদের গোলটেবিলে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন। সবশেষ ১৯৬০-এর দশকে পশ্চিম জার্মানিতে এমন বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছিল।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরিবেশের জন্য বিপর্যয়কর বন্ধ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করতে চায় জার্মানি। জার্মান অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক বলেছেন যে বার্লিনকে রুশ গ্যাসের ঘাটতি মেটাতে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে।