ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। দেশটির হয়ে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো সেনা না পাঠালেও ভারী অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করছে। ইউক্রেন বলছে, তাদের আরও সাহায্য প্রয়োজন। রাশিয়ার মতে, ইউক্রেনকে ন্যাটো সহায়তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনকে ইউরোপের অন্যান্য রাষ্ট্রে হামলার সূচনা পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
পাশাপাশি ন্যাটোভুক্ত দেশ হতে না পারলেও পাশ্চাত্যের কাছে তিনি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন।
মঙ্গলবার দ্য ইকোনমিস্ট আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা জোটের অংশ না হলেও কার্যকর হবে এমন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা আমাদের দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের দেশের ভূখণ্ডকে অন্যান্য ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকে দখল করার জন্য হামলার ক্ষেত্র হিসেবে দেখে। যার অর্থ, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পুরো ইউরোপের জন্য দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা প্রদান করা।’
জেলেনস্কি এ সময় বুদাপেস্ট মেমোরেন্ডামের কথাও উল্লেখ করেছেন। ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের যেকোনো সামরিক হামলার ক্ষেত্রে ইউক্রেনকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়া চুক্তির অধীনে ইউক্রেন তার সোভিয়েত যুগের পারমাণবিক অস্ত্রাগার সমর্পণ করেছিল। সে চুক্তিতে ৩টি রাষ্ট্রই ইউক্রেনকে আক্রমণ না করার অঙ্গীকার করেছিল।
জেলেনস্কি বলেছেন যে বুদাপেস্ট মেমোরেন্ডামের অধীনে প্রদত্ত নিশ্চয়তা এবং এর অনুরূপ আশ্বাস এখন ধ্বংস হয়ে গেছে।
তবে রাশিয়া বলছে, ন্যাটোর সম্প্রসারণ ইউরোপীয় নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ক্রেমলিনের দাবি ইউক্রেনকে অবশ্যই নিরপেক্ষ দেশের ভূমিকা পালন করতে হবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
দোনবাসের বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।