ভারতের উত্তরপ্রদেশে হিন্দু দেবদেবীর ছবি ছাপা ছিল এমন খবরের কাগজে মুড়ে মুরগির মাংসের খাবার বিক্রির অভিযোগে এক রেস্তোরাঁ মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেস্তোরাঁ মালিক মহম্মদ তালেবের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
দেবদেবীর ছবিযুক্ত কাগজে খাবার বিক্রি করে হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ তুলে তালেবের দোকানের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজ্যটির উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’ এই বিক্ষোভ করে।
পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
যেভাবে ঘটনার শুরুউত্তরপ্রদেশের সম্ভল শহরে তালেবের রেস্তোঁরাটির নাম ‘মেহেক’। বেশ পুরনো এই রেস্তোরাঁ থেকে অনেকেই মাটন কাবাব, চিকেন তান্দুরির মতো খাবার পার্সেল করে নিয়ে যায়।
গত ১ জুলাই থেকে ভারতে পলিথিনের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে দোকানিরা বাধ্য হয়ে কাগজের ব্যাগ বা খবরের কাগজের ঠোঙাতেই ক্রেতাদের হাতে জিনিসপত্র তুলে দিতে শুরু করেছেন। তালেব দোকানে ব্যবহার করছিলেন পুরনো খবরের কাগজ। আর হিন্দুদের নবরাত্রি উৎসবের সময় প্রকাশিত সেই কাগজগুলোতে ছিল নানা হিন্দু দেবদেবীর ছবি।
সেই কাগজে মুড়ে মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি খাবার বিক্রি করা হচ্ছে বলে রোববার খেয়াল করেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। তারা রেস্তোরাঁটির সামনে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন।
হিন্দু জাগরণ মঞ্চের জেলা সভাপতি কৈলাস গুপ্তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তালেব ও তার দোকানের কর্মীরা।
রাজ্য পুলিশ যা বলছেসম্ভলের পুলিশ সুপার চক্রেশ মিশ্রা মঙ্গলবার টুইটারে জানান, রেস্তোরাঁয় হিন্দু দেবদেবীদের ছবি সংবলিত কাগজে মুড়ে মাংস বিক্রি করার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ দোকানের মালিক তালেব ও কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তাদের ওপর ছুরি-চাকু নিয়ে হামলার চেষ্টা চালানো হয়।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ এরপর তালেবকে গ্রেপ্তার করে। আদালতের নির্দেশে তাকে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
‘এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। কেউ যাতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে না পারে সে ব্যাপারেও পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’
তালেবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো এবং ইচ্ছাকৃতভাবে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
‘সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত’এদিকে রেস্তোরাঁটির একজন কর্মী জানিয়েছেন, তাদের মালিক কাবাডি বা পুরনো জিনিসপত্রের দোকান থেকেই ওই খবরের কাগজগুলো ঠোঙা বানাতে কিনে এনেছিলেন। তারা কেউ খেয়াল করেননি যে তাতে হিন্দু দেবদেবীর ছবি আছে।
এই ঘটনা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত বলে তিনি দাবি করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ভারতে সোশ্যাল মিডিয়াতে এ ঘটনা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। একদল বলছেন, হিন্দু দেবদেবীদের যারা এভাবে অপমান করার সাহস পায় তাদের এ ধরনের শাস্তিই প্রাপ্য।
আরেক দল বলছে, তালেব যদি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে গ্রেপ্তার হন তাহলে বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নূপুর শর্মা এখনও জেলের বাইরে কেন?