ইতিহাস বিকৃতি হলে, ইতিহাসে সত্য সাধনা না হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে শিক্ষকদের ঝুঁকি নিতে হবে বলে মনে করেন ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
বৃহস্পতিবার কলকাতার সল্টলেকে অমর্ত্য সেন রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও হার্ভাড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অমর্ত্য সেন।
সেখানে প্রতীচি ট্রাস্টের একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে ভারতের বর্তমান সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তৃতা করেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। এ সময় ভারতের বর্তমান সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন তিনি।
একজন স্কুলশিক্ষক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও হার্ভাড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে প্রশ্ন করেন, যেভাবে সিলেবাস থেকে ইতিহাসের নানা অধ্যায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে, বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে একজন শিক্ষকের ভূমিকা কী?
জবাবে অমর্ত্য সেন বলেন, ইতিহাসের উদ্দেশ্য হলো সত্য সাধনা করা। ভুল করা হলে ঠিক করতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষকদের এর জন্য ঝুঁকি নিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বহু বিপ্লবীর জেলযাত্রার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় কত মানুষ দ্বীপান্তরে গিয়েছেন, জেলে গিয়েছেন, সেইসব তো আমরা জানি। ঝুঁকি নিয়েই তারা এসব কাজ করেছেন।’
তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতাই শেষ দেখা নয়।
ভারতের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আনছে অনেক মহল।
কেন্দ্রীয় স্কুলগুলোর সিলেবাস থেকে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস সরিয়ে নেয়া হয়েছে। মুসলিম শাসন আমলে তাজমহল থেকে জ্ঞানবাপীর মতো বিভিন্ন স্থাপত্য কীর্তির ভেতরে হিন্দু মন্দির ও দেবদেবীর উপস্থিতির দাবি করে দেশের বিভিন্ন আদালতে মামলাও চলছে।
এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘ভারতের ইতিহাস চর্চা শেষ হয়ে যায়নি, ইতিহাস লেখার প্রক্রিয়া আজও চলছে। ফলে কোনটা ইতিহাস আর কোনটা বিকৃতি, সে ব্যাপারে এখনই অবস্থান নেয়ার সময় আসেনি।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইতিহাসবিদ সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘ইতিহাস হবে সত্যনিষ্ঠ । বিকৃতির কোনো জায়গা নেই ইতিহাসে।’