বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চিকিৎসার জন্য ভূমিকম্পে আহতদের গজনি কাবুলে নিচ্ছে তালেবান

  •    
  • ২৪ জুন, ২০২২ ০৯:২০

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে কাছের বড় শহরে যেতেও তিন ঘণ্টা গাড়িতে যাওয়া লাগে এবং রাস্তাটিও দুর্গম, ফলে আহত ব্যক্তিদের পরিবহন কঠিন হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতেও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত খোস্ত ও পাকতিকা থেকে আহত মানুষদের গজনি ও কাবুলের মতো অন্যান্য প্রদেশে নিয়ে যাচ্ছে তালেবান। পাকতিকা প্রদেশে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই।

আফগানিস্তানে পাকতিকা প্রদেশে ৬.১ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ৫০০ বাড়িঘর ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দশকের মধ্যে আফগানিস্তানে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে যারা বেঁচে গেছেন, তাদের খাবার নেই, আশ্রয় নেই। সম্ভাব্য কলেরা প্রাদুর্ভাবেরও আশঙ্কা রয়েছে।

বিশেষ করে আহত ব্যক্তিদের অবস্থা দুর্বিষহ, কারণ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে কাছের বড় শহরে যেতেও তিন ঘণ্টা গাড়িতে যাওয়া লাগে এবং রাস্তাটিও দুর্গম, ফলে আহত ব্যক্তিদের পরিবহন কঠিন হয়ে গেছে। আহত কয়েকজনকে তালেবানের সামরিক হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসা দিতে সরঞ্জাম ও ওষুধেও ঘাটতি রয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাকতিকা প্রদেশের চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘তাদের অঞ্চলে ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিকের তীব্র ঘাটতি রয়েছে।’

ভূমিকম্পের ফলে অনেক পরিবারই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হলো আশ্রয়। কিন্তু পর্যাপ্ত আশ্রয়ের ব্যবস্থা সেখানে করা যাচ্ছে না।

টোলো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত খোস্ত ও পাকতিকা থেকে আহত মানুষদের গজনি ও কাবুলের মতো অন্যান্য প্রদেশে নিয়ে যাচ্ছে তালেবান। পাকতিকা প্রদেশে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই।

আফগানিস্তানে এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সম্ভাব্য কলেরা প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে সতর্ক করেছে। এরই মধ্যে সংস্থাটি বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার কাছে ১৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছে।

এদিকে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে।

জীবিত ও উদ্ধারকারীরা ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়া গ্রাম, রাস্তাঘাট ও মোবাইল টাওয়ারের কথা জানিয়েছে।

দুই দশকের মধ্যে দেশটিতে হওয়া সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা বর্তমান তালেবান সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটি মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটে আছে। তালেবানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা আব্দুল কাহার বলখি আফগান সরকারের সীমাবদ্ধতাও স্বীকার করে নিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘আর্থিকভাবে জনগণকে যতটা সহায়তা দেয়া প্রয়োজন ততটা দিতে অক্ষম বর্তমান প্রশাসন।‘

বলখি জানিয়েছেন, সাহায্য সংস্থা, প্রতিবেশী দেশ ও বিশ্বশক্তিগুলো সাহায্য করছে। কিন্তু তার মতে, সহায়তা আরও বাড়ানো দরকার, কারণ এটি একটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প, যা কয়েক দশকের মধ্যে হয়নি।

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল পাকতিকার খোস্ত শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে, ভূমিকম্প নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইএমএসসি জানিয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পাশাপাশি পাকিস্তানের ইসলামাবাদেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে পাকতিকার গায়ন ও বারমাল জেলায়। গায়নের একটি গ্রাম পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে।

পাকতিকার একজন স্থানীয় সাংবাদিক জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে মোবাইল টাওয়ারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ করা আরও কঠিন হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

আফগানিস্তান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। দেশটির অবস্থান টেকটোনিকভাবে সক্রিয় অঞ্চলে।

জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের রিপোর্ট অনুসারে, গত এক দশকে দেশটিতে ভূমিকম্পে ৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। দেশটিতে ভূমিকম্পে বছরে গড়ে মারা যায় ৫৬০ জন।

গত জানুয়ারিতেও দেশটির পশ্চিমে ভূমিকম্পে ২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় ও শতাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়।

এ বিভাগের আরো খবর