ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যেই তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছে চীন। এমন পরিস্থিতিতে চীনের যুদ্ধবিমান, বোমারু বিমান ও সহায়তা বিমানসহ প্রায় ২৯টি বিমানের একটি বহর তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা সীমায় অনুপ্রবেশ করার বিষয়টি জানিয়েছে স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ান।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীনের বিমানবহরের মধ্যে ছিল ৬টি বোমারু বিমান, ১৭টি যুদ্ধবিমান ও ৬টি লজিস্টিক বিমান। তাইওয়ান ও ফিলিপাইনের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে বহরটি প্রশান্ত মহাসাগরে উড়েছিল।
তাইওয়ানের পক্ষ থেকেও চীনের বিমানকে আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চল থেকে বের করে দিতে বিমান পাঠানো হয় এবং চীনা বিমানকে চিহ্নিত করার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ব্যবহার করা হয়।
তবে তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা সীমায় বড় ধরনের চীনা অনুপ্রবেশের ঘটনা এই প্রথম নয়।
এর আগে মে মাসেও তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে চীনের বিমানের অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছিল তাইওয়ান বিমান বাহিনী। চীনের মোট ৩০টি বিমান সে সময় তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল।
গত মাসে প্রতিরক্ষা অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করা চীনা বিমানগুলোর মধ্যে ২২টি ছিল যুদ্ধবিমান আর বাকিগুলো ছিল ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার ও সাবমেরিন বিধ্বংসী বিমান।
তাইওয়ান সে সময় জানিয়েছিল, এই সময় তারা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও সক্রিয় করে এবং চীনের বিমানগুলোকে বের করে দিতে যুদ্ধবিমান পাঠায়।
উল্লেখ্য, তাইওয়ান একটি স্বশাসিত অঞ্চল। ১৯৪৯ সালে চীনের গৃহযুদ্ধের সময় পরাজিত পক্ষ পালিয়ে গিয়ে তাইওয়ানে আশ্রয় নেয় এবং সেখানে সরকার প্রতিষ্ঠা করে। বিশ্বের প্রায় সব দেশই এক চীননীতির আলোকে তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।
তবে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও কূটনৈতিক ও সামরিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। তাইওয়ান সামরিক বাহিনীর প্রায় সবাই অস্ত্র কেনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
এদিকে ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রেক্ষাপটে এক নতুন বাস্তবতায় ও চীনের ক্রমবর্ধমান হুমকিতে যুক্তরাষ্ট্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তাইওয়ানকে সামরিক উপায়ে একীভূতকরণের যেকোনো চেষ্টায় সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ করবে তারা।
চীন বলছে, তাইওয়ান দেশটির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং চীন যেকোনো উপায়ে তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একীভূত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারা সামরিক উপায়ও বিবেচনায় রেখেছে।
তাইওয়ানও বলছে, চীনের আক্রমণ থেকে দাঁত ও নখ দিয়ে তারা দ্বীপটিকে রক্ষা করবে।
চীন প্রায় নিয়মিতভাবেই তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করে।
গত ২৩ জানুয়ারি চীনের প্রায় ৩৯টি যুদ্ধবিমানের বিশাল বহর তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল। চীনের এমন পদক্ষেপে বরাবরই সতর্ক করে আসছে তাইওয়ান। তবে এখন পর্যন্ত দ্বীপটিকে চীনা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।