অধিকৃত পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উত্তরে কালকিলিয়া শহরে রোববার এ ঘটনা ঘটে।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা বলছে, নিহত ব্যক্তির নাম নাবিল আহমেদ ঘানেম। জলজুলিয়া গ্রামের কাছে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ৫৩ বছরের নাবিল পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলীয় শহর নাবলুসের বাসিন্দা ছিলেন।
ওয়াফার প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তা বেড়া অতিক্রম করার সময় নাবিলকে গুলি করা হয়। তিনি পশ্চিম তীরের হাজার হাজার ফিলিস্তিনির মতো, যারা নিয়মিত ইসরায়েলে কাজ খোঁজেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘সন্দেহভাজন একজনকে গুলি করা হয়েছে। তিনি নিরাপত্তা বেড়া ভাঙচুর করেছেন।’
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা বলছে, হত্যার জন্যই তার ওপর গুলি চালানো হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা এবং অনেক অধিকার সংগঠন এই বেড়াকে ‘বর্ণবাদের প্রাচীর’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
হেগের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বেআইনি ঘোষণা করে ইসরায়েলকে বেড়াটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। তবে তাতে কর্ণপাত করেনি তেল আবিব।
- আরও পড়ুন: ইহুদি আগ্রাসনের মুখে আল-আকসা
ফিলিস্তিনি শ্রমিক ইউনিয়ন বলছে, প্রতিদিন অন্তত ১ লাখ ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি পারমিট নিয়ে ইসরায়েলে কাজের জন্য প্রবেশ করে। কারও কারও কাছে ইসরায়েলে কাজ করার অনুমতি আছে; অনেকে আবার অনুমোদন ছাড়াই ইসরায়েলে ঢুকতে চায়।
নাবিলের কাছে চেকপয়েন্ট অতিক্রমের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল কি না তা স্পষ্ট নয়। তার মরদেহ ইসরায়েলের কেফার সাবার মেইর মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে গেছে কর্তৃপক্ষ।
সহিংসতা বাড়ছে
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, চলতি বছর ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে মার্চ থেকে ফিলিস্তিনি হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন।
ওয়াফার প্রতিবেদন বলছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের উত্তর-পশ্চিমে তুলকারমের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি সামরিক চেকপয়েন্টের কাছে রোববার সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পাঁচ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিন জেনিনের দক্ষিণ-পশ্চিমে বারতা শহরে অভিযান চালিয়ে আরও ১৩ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করে ইসরায়েলি বাহিনী।
জেনিনে প্রিজনার্স ক্লাবের পরিচালক মনতাসার সামুর ওয়াফাকে বলেন, ‘অভিযানটি একটি আবাসিক ভবনকে ঘিরে পরিচালিত হয়েছিল।
গত মাসে আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ জেনিনে একটি অভিযান কভার করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে খুন হন। ৫১ বছরের শিরিন আল জাজিরা আরবি টেলিভিশনের একজন সিনিয়র সংবাদদাতা ছিলেন। চ্যানেলটি চালু হওয়ার এক বছর পর ১৯৯৭ সালে সেখানে যোগ দেন তিনি।
- আরও পড়ুন: ‘তিনি ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের কণ্ঠস্বর’
ফিলিস্তিনের অনেকেই শিরিনকে ২০০০ সালে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহের সময় পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বড় বড় হামলা কভার করার জন্য মনে রাখবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই হত্যার নিন্দা জানিয়ে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।