মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির নেত্রী অবমাননা করেছেন- এমন অভিযোগে দেশটি জুড়ে বিক্ষোভ চলছে। শুক্রবার দেশটির বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে।
দিল্লির জামা মসজিদে জুমার নামাজের পর বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়। কলকাতার পাশে বম্বে রোড অবরোধ করা হয়। বিক্ষোভ হয়েছে উত্তরপ্রদেশেরও বিভিন্ন জায়গায়।
জামা মসজিদের সামনে মুসল্লিরা পোস্টার-ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ ও স্লোগান দেয়। তারা নূপুর শর্মাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়।
দিল্লি পুলিশের ডিসিপি সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট শ্বেতা চৌহান বলেন, ‘জুমার নামাজের জন্য প্রায় ১৫০০ লোক জামা মসজিদে জড়ো হয়েছিল। নামাজের পরে প্রায় ৩০০ লোক বেরিয়ে নূপুর শর্মা এবং নবীন জিন্দালের উস্কানিমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।’
তিনি বলেন, ‘এই লোকেরা রাস্তায় অনুমতি ছাড়াই প্রতিবাদ করেছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর ও প্রয়াগরাজে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ হয়।
লখনউয়ের পুলিশ কমিশনার ডি কে ঠাকুর বলেন, ‘এখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কেউ সমাবেশ করতে চাইলে আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।’
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি (আইন ও শৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘আমরা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রার্থনা করার জন্য আবেদন করেছি। নামাজের পরে সাহারানপুরে ভিড় ছিল, তারপর ধীরে ধীরে মানুষ তাদের বাড়িতে ফিরে যান। কানপুরের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সেখানে ১৪৪ ধারা জারি আছে। উন্নাও এবং অনেক জায়গায় উস্কানিমূলক পোস্টারের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে নূপুর মহানবীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
ইসলাম সম্পর্কেও তার কিছু মন্তব্যের জেরে দেশটিতে মুসলিম সমাজে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। নূপুরের বক্তব্যের প্রতিবাদে গত শুক্রবার কানপুরে বনধ পালনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন রাজ্যে এরই মধ্যে নূপুরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শুধু নূপুরই নন, মহানবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিজেপি নেতা নবীন কুমার জিন্দালও।
এ ইস্যুতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় বিজেপির পক্ষ থেকে রোববার নূপুর ও নবীনকে ছয় বছরের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
মহানবীকে নিয়ে বিজেপির দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে দলটি। অন্তত ১৫টি দেশ এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। ব্যাপক প্রতিক্রিয়া এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। এসব দেশে ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম এবং পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সেসব দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছে মুসলমানরা।
এ ঘটনার পর দলের নেতা ও মুখপাত্রদের টিভি বিতর্কে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নতুন নিয়ম করেছে বিজেপি। এখন থেকে কেবল দলটির অনুমোদিত মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্টরা টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন। টিভি বিতর্কে অংশ নিতে মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্ট নির্ধারণ করে দেবে দলটির মিডিয়া সেল।