স্মরণকালের ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতিতে ধুঁকছে জার্মানি। চলতি মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার ঠেকেছে ৭.৯-এ। এপ্রিলেও মুদ্রাস্ফীতি সাম্প্রতিক সময়ের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল বলে জানাচ্ছে জার্মানির পরিসংখ্যানবিষয়ক সংস্থা-ডিস্ট্যাট৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবশেষ ১৯৭৩-৭৪ সালের ভয়াবহ তেলসংকটের সময়েই কেবল এমন পরিস্থিতি দেখেছেন জার্মানরা।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দারুণ এক পদক্ষেপ নিয়েছে ইউরোপের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানি। জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই তিন মাসের জন্য মাত্র ৯ ইউরোর বিশেষ পরিবহন পাস ছেড়েছে জার্মানির সরকার। এই পাস ব্যবহার করে দেশটির আঞ্চলিক পর্যায়ে ট্রেনসহ সব গণপরিবহনে চড়া যাবে।
শুধু তা-ই নয়, পেট্রোলে লিটারপ্রতি ২৯.৫৫ সেন্ট এবং ডিজেলে ১৪.০৪ সেন্ট মূল্যছাড়ও দিয়েছে দেশটির সরকার।
এই উদ্যোগে দারুণ সারা মিলেছে। ১ জুন থেকেই তিলধারণের জায়গা নেই ট্রেনগুলোতে। সবাই ছুটছেন পছন্দের পর্যটন কেন্দ্রে।
ডিবি রেজিও ওয়ার্কস কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান রালফ ড্যামডে বলছেন, প্রতিদিন অন্তত ৪০০ ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যাচ্ছে। জ্বালানির কম মূল্যের সুযোগে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও বেরোচ্ছেন অনেকে।
‘আঞ্চলিক ট্রেনগুলোতে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক অনেক বেশি ভিড় হচ্ছে। গোটা দেশেই তৈরি হয়েছে যানজট। প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনগুলো কানায় কানায় পূর্ণ। ট্রেন থেকে বাড়তি যাত্রীদের নামিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটছে।’
অতিরিক্ত যাত্রীবাহী ট্রেনসহ নানা সমস্যার অন্তত ৭০০ অভিযোগ প্রতিদিন অপারেশন সেন্টারে পাঠানো হচ্ছে। সপ্তাহান্তে বা আগের ছুটির তুলনায় যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
ড্যামডে বলেন, ‘রেলওয়ের কর্মীদের বিরুদ্ধে শারীরিক আক্রমণ হয়নি, তবে মৌখিক আক্রমণ হচ্ছে।’
যাত্রীদের এমন চাপের কারণে রেলকর্মীদের বাড়তি কাজ করতে হচ্ছে। ড্যামডে বলেন, ‘স্বাভাবিকের তুলনায় এখন যাত্রীদের বেশি সহায়তা প্রয়োজন। এই যেমন, গণপরিবহনে মাস্ক যে এখনও বাধ্যতামূলক, তা অনেকেই জানেন না।’
৯ ইউরোতে মাসিক টিকিটের অফারটি আগস্ট পর্যন্ত চলবে। আঞ্চলিক ট্রেনসহ জার্মানিজুড়ে স্থানীয় পরিবহনে এটি ব্যবহার করা যাবে। তবে আইসিই পরিষেবাগুলোর মতো দূরদূরান্তের যাত্রায় এই টিকিট ব্যবহার করা যাবে না।
যাত্রী সমিতির সংগঠন-প্রো বাহনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘পিক টাইমে মূল লাইনগুলো প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকায় অনেক ট্রেন সময়মতো ছাড়তে পারছে না।
‘উত্তর জার্মানির মেট্রোনমের মতো কিছু রেল কোম্পানি সাইকেল পরিবহন বাদ দিয়েছে। কারণ তারা ভিড় সামলাতে পারেনি।’