ইউক্রেনে দূরপাল্লার মাল্টিপল রকেট সিস্টেম- (এমএলআরএস) পাঠানোর গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়ায় আঘাত হানতে পারে এমন রকেট সিস্টেম ইউক্রেনে পাঠাবে না তারা।’
ইউক্রেনের পূর্ব ডনবাসে গত এক সপ্তাহে ধরে লড়াই তীব্র হয়েছে। রুশ বাহিনীর গোলার আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে গোটা অঞ্চলটি। সেভেরোডোনেটস্ক এবং ডনবাসের অন্যান্য অংশেও চলছে রকেট, ট্যাংক এবং বিমান হামলা। ভেঙে পড়েছে ইউক্রেন সেনাদের প্রতিরোধ।
এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমএলআরএস সরবরাহের আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং অন্যান্য ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা।
ঊর্ধ্বতন এক আমেরিকান কর্মকর্তার বরাতে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনকে এমএলআরএস দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে হোয়াইট হাউস। তবে সিস্টেমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ দূর পাল্লার অস্ত্র দেয়া হবে না।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর পাশাপাশি খারকিভের মতো কয়েকটি শহরে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে পুতিন বাহিনী।
শুরু থেকেই এই অভিযানের নিন্দা জানিয়ে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। রাশিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করতে, দেয়া হচ্ছে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা।
ইউক্রেন সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো এম৭৭৭ হাউইৎজার ব্যবহার করছে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে। এটি প্রায় ২৫ কিলোমিটার (১৬ মাইল) দূরের লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। তবে তার চেয়ে অনেক দূরে লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে এমএলআরএস।
রাশিয়ান মাল্টিপল রকেট ব্যাটারিস ইউক্রেনের বাহিনীকে আঘাত করছে। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯০-৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধ এবং ২০০৩ সালে ইরাকে এমএলআরএস ব্যবহার করেছিল।
যুক্তরাজ্যের কাছেও আছে এমএলআরএস। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছিলেন ‘নৃশংস রুশ আর্টিলারির’ বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য ইউক্রেনের রকেট পাওয়া উচিত। তবে তিনি এসব অস্ত্র সরবরাহ করার কথা বলেননি।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া
ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্রের চালানের বিরোধীতা শুরু থেকেই করে আসছে রাশিয়া। দূর পাল্লার এমএলআরএস পাঠানোর খবরও গেছে মস্কোতে। এ ধরনের ভারী অস্ত্র সরবরাহকে উসকানি হিসেবে দেখছে ক্রেমলিন। আর সমর বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে মস্কো।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ বলেন, “অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদীদের উসকে দিচ্ছে পশ্চিমারা।
“পশ্চিমারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ চালাচ্ছে। এতে উত্তেজনা কেবল বাড়বে।”