ভারতীয় লেখিকা গীতাঞ্জলি শ্রীর হিন্দি উপন্যাস ‘টুম অফ স্যান্ড’ প্রথমবারের মতো ‘আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার’ জিতেছে।
বৃহস্পতিবার লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে গীতাঞ্জলির হাতে ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড মূল্যের সাহিত্যের সম্মানজনক পুরস্কারটি তুলে দেয়া হয়। ইংরেজি ভাষায় বইটির অনুবাদক ডেইজি রকওয়েলের সঙ্গে যৌথভাবে পুরস্কারের অর্থ পেয়েছেন নয়াদিল্লির ৬৪ বছর বয়সী লেখিকা।
ভারতের যেকোনো ভাষায় লেখা বুকারজয়ী প্রথম উপন্যাসও এটি।
হিন্দিতে লেখা গীতাঞ্জলির মূল উপন্যাসটির নাম ছিল ‘রেত সমাধি’।
পুরস্কার হাতে নিয়ে উচ্ছ্বসিত গীতাঞ্জলি শ্রী বলেন, ‘আমি কখনই বুকার পুরস্কারের স্বপ্ন দেখিনি, আমি কখনই ভাবিনি যে আমি সেটা পেতে পারি। কী বিশাল অর্জন আর স্বীকৃতি। আমি বিস্মিত, আনন্দিত, সম্মানিত ও বিনীত।’
তিনি বলেন, “এই পুরস্কার পাওয়ার মধ্যে এক ধরনের আনন্দ-বেদনা মেশানো অনুভূতি হচ্ছে। ‘রেত সমাধি’ বা ‘টুম অফ স্যান্ড’ হলো আমাদের বসবাসের জগতের একটি বিবরণ। এক অতি-বৃদ্ধার বিশেষ ধরনের মানসিক শক্তি, যা আসন্ন মৃত্যুর মুখে তার শেষ আশাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখে। বুকার পুরস্কারপ্রাপ্তি অবশ্যই উপন্যাসটিকে অনেক বেশি ভাষাভাষীর মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সহায়ক হবে।’’
হিন্দি কথাসাহিত্যের প্রথম এই বুকার প্রাপ্তির বিষয়ে ৬৪ বছর বয়সী লেখিকা বলেন, ‘আমার এবং এই বইটির এমন স্বীকৃতির পেছনে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী হিন্দি সাহিত্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য ভাষার সমৃদ্ধ অতীতের অবদান।’
৮০ বছরের এক বৃদ্ধার যাপিত জীবনকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে ‘রেত সমাধি’ উপন্যাসটি। স্বামীর মৃত্যুর পর পাকিস্তানে পাড়ি দিতে হয় সেই ভারতীয় নারীকে। দেশভাগের সাক্ষী ছিলেন তিনি। সেই সময়ের টানাপোড়েন, ক্ষতগুলোই যেন ফের অনুভব করতে চান এই বৃদ্ধা। কখনও মেয়ে, কখনও মা, নারী কিংবা নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সেই দুর্বিষহ জীবনের হিসাব মেলাতে চাইছেন তিনি।
এর আগে, ১৯৯৭ সালে আরেক ভারতীয় লেখিকা অরুন্ধতী রায় তার প্রথম উপন্যাস ‘গড অফ স্মল থিংস’-এর জন্য ম্যান বুকার পুরস্কার জিতেছিলেন।