কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতা ইয়াসিন মালিকের আজীবন সশ্রম কারাবাসের রায় দিয়েছে ভারতের একটি আদালত। রায়ের পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে তার অনুসারীদের মধ্যে। বিচ্ছিন্ন কিছু হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
দিল্লির বিশেষ আদালতের বিচারপতি প্রবীণ সিং বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের (জেকেএলএফ) নেতা ইয়াসিন মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম পরিচালনা ও প্রচারণার। তার সংগঠনকে আগেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। বিভিন্ন সময় ইয়াসিন মালিককে গৃহবন্দি করে রাখা হলেও তার প্রভাববলয় কমেনি। জঙ্গিদের মদত দেয়ার অভিযোগে দুই বছর আগে তাকে গ্রেপ্তার করে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। তার পর থেকে তিনি জেলে আছেন।
বিচার চলাকালে এনআইএ ইয়াসিন মালিকের মৃত্যুদণ্ড দাবি করে। বিচারকের কাছে ইয়াসিনের আইনজীবী যাবজ্জীবন জেল দেয়ার ব্যাপারে আর্জি জানান।
ইয়াসিন আদালতকে জানান, তিনি ১৯৯৪ সালে অস্ত্র ছেড়েছেন। তার পর থেকে অহিংস পথেই চলেছেন। এরপর তিনি আর রাজনীতি করবেন না। তাই আদালত যদি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, তাতে তিনি আপত্তি করবেন না। নতুন আবেদন জানাবেন না।
দিল্লির এনআইএ আদালত গত ১৯ মে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিলেও বিচারক শাস্তির সিদ্ধান্ত রিজার্ভ রাখেন। তা বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায় ঘোষণা করা হয়। দুটি মামলায় ইয়াসিনকে যাবজ্জীবন সাজার পাশাপাশি, ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর উপত্যকায় জোর ধরপাকড় শুরু করে ভারতীয় সেনা। তখনই ইয়াসিন মালিকসহ বেশ কিছু নেতার জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আসে। সে সময় গ্রেপ্তার করা হয় স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ইয়াসিন মালিককে।
উগ্রপন্থিদের আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা দেয়ার অভিযোগ তদন্তের পর ইয়াসিনকে চলতি মাসেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। একই মামলায় লস্কর-ই-তাইয়েবার হাফিজ শাহিদ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের সৈয়দ সালাউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারা ছাড়াও ফৌজদারি দণ্ডবিধির ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে ইয়াসিনের সাজা ঘোষণার সংবাদে শ্রীনগরের পরিস্থিতি থমথমে হয়ে উঠেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক দোকান-বাজার। আলোচিত এ উপত্যকার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কয়েকটি স্থানে ইয়াসিনের সমর্থকদের হামলার শিকার হয়েছেন নিরাপত্তা রক্ষীরা।