উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্স নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যখন অনেকটাই কমে এসেছে, তখন বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডব্লিউএইচওর বৈঠকে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং এর ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
চলতি মাসে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য মিলেছে। এর মধ্যে ৬ মে থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হয়েছেন ২০ জন। আর শুক্রবার ফ্রান্স, জার্মানি ও বেলজিয়ামে প্রথমবারের মতো ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
একসময় গুটি বসন্তে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা যেত। এ ভাইরাসটি ১৯৮০ সালে পুরোপুরি নির্মূল ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে চিকেন পক্স, এটিকে সাধারণত শৈশবের রোগ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।
চিকেন পক্সে আক্রান্ত হলে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশিব্যথা এবং শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। চিকেন পক্স পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। কয়েক দিনের মধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যায়। বর্তমানে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্সের সঙ্গে গুটি বসন্ত ও চিকেন পক্স উভয়েরই মিল রয়েছে।
মাঙ্কিপক্সে প্রাণহানির সংখ্যা খুবই কম। এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটলেও তা সীমিত। কাঠবিড়ালি, গাম্বিয়ান ইঁদুর, ডর্মিসের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বানরসহ কিছু প্রাণীর মধ্যে মাঙ্কিপক্স পাওয়া গেছে।
এ বছরই যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী প্রথম দেখা গেছে। মাদ্রিদে এরই মধ্যে ২৩ জনের শরীরে এই ভাইরাস সংক্রমিত হলে সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করে। আক্রান্তদের মধ্যে আটজন সমকামী পুরুষ রয়েছে।
মাদ্রিদের আঞ্চলিক স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মাদ্রিদে ভাইরাসটি ফ্লুইড কনটাক্টের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ইউরোপে শুধু স্পেনই নয়, লিসবন এবং আশপাশের এলাকায় পর্তুগিজ যুবকদের মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার ২০টি সন্দেহভাজন ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে।
মাঙ্কিপক্সের দুটি রূপ রয়েছে। একটি পশ্চিম আফ্রিকান স্ট্রেন এবং অন্যটি মধ্য আফ্রিকান স্ট্রেন। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ব্যক্তির মাঙ্কিপক্স হালকা ওয়েস্ট আফ্রিকান স্ট্রেনের।
তবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া কঠিন। এর সংক্রমণ সাধারণত ফ্লুইড ট্রান্সফার, ঘা, দূষিত পোশাক বা দীর্ঘস্থায়ী মুখোমুখি যোগাযোগ কিংবা সহাবস্থানের মাধ্যমে ঘটে, যা শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।