বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাকিস্তানে ৩৮ বিলাস পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা

  •    
  • ২০ মে, ২০২২ ০১:১৪

সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে দিনরাত কাজ করছেন। এ জন্য সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল সামগ্রী আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

শ্রীলঙ্কার মতো অর্থনৈতিক মন্দা আর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। ইতিহাসের সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে পাকিস্তানি রুপির। প্রতি ডলারের বিপরীতে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি রুপির বাজারদর ২০০-তে পৌঁছেছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ৩৮ অপরিহার্য নয়, এমন বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসলামাবাদ। এ পদক্ষেপকে ‘জরুরি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা’ বলছে পাকিস্তান সরকার।

দেশটির তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব ইসলামাবাদে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে নিষেধাজ্ঞার এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। । ‘জরুরি অর্থনৈতিক পরিকল্পনার’ আওতায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

ইসলামাবাদে সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব। ছবি: ডন নিউজ

এর কিছু পরই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জানান, এ সিদ্ধান্তে দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা রক্ষা পাবে।

টুইটে শাহবাজ বলেন, ‘আমরা কঠোরতা অনুশীলন করব। আর্থিকভাবে শক্তিশালী ব্যক্তিদের এই প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিতে হবে। যাতে আমাদের মধ্যে কম সুবিধাপ্রাপ্তদের পিটিআই (ইমরান খানের দল) সরকারের চাপানো বোঝা বহন করতে না হয়।’

Together we will overcome all the challenges with resolve and determination, InshaAllah! 🇵🇰 https://t.co/gIM7lqcjls

— Shehbaz Sharif (@CMShehbaz) May 19, 2022

ক্রমবর্ধমান আমদানি ব্যয়, হিসাবের ঘাটতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের কারণে গত কয়েক সপ্তাহে ডলারের বিপরীতে রুপির দর হারিয়েছে ব্যাপক। এই পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের নতুন সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে দিনরাত কাজ করছেন। এ জন্য সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল সামগ্রী আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

নিষিদ্ধ হয়েছে যেসব পণ্য

গাড়ি, মুঠোফোন, সিগারেট, গৃহস্থালির সরঞ্জাম, ফলমূল, ক্রোকারিজ, ব্যক্তিগত অস্ত্র ও গোলাবারুদ, জুতা, বৈদ্যুতিক বাতি, হেডফোন ও লাউড স্পিকার, সস, দরজা ও জানালার কাঠামো, ভ্রমণে ব্যবহৃত ব্যাগ, স্যানিটারি পণ্য, মাছ, কার্পেট, সংরক্ষিত ফলমূল, টিস্যু পেপার, আসবাব, শ্যাম্পু, বেকারি পণ্য, বিলাসবহুল ম্যাট্রেস ও স্লিপিং ব্যাগ, জ্যাম ও জেলি, কর্নফ্লেক্স, প্রসাধনী, হিটার ও ব্লোয়ার, সানগ্লাস, রান্নাঘরের সরঞ্জাম, হিমায়িত মাংস, ফলের জুস, পাস্তা, আইসক্রিম, দাড়ি কামানোর সামগ্রী, বিলাসী চামড়াজাত পোশাক, বাদ্যযন্ত্র, সেলুনের সরঞ্জাম, চকলেট ও কোমল পানীয় আমদানীতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন জরুরি পরিস্থিতি চলছে। পাকিস্তানের জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। অর্থনৈতিক পরিকল্পনাকে মেনে নিতে হবে। বিলাসবহুল পণ্যের ওপর এই নিষেধাজ্ঞায় ৬০০ কোটি ডলার খরচ বাচবে।

‘ইতোমধ্যে সেসব আমদানি আদেশের ক্রেডিট চিঠি খোলা হয়েছে বা অর্থ প্রদান করা হয়েছে সেগুলোর ওপর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

‘আমাদের আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। সরকার এখন রপ্তানির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার আওতায় স্থানীয় শিল্পের উন্নতি ঘটবে, কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে।’

তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব আরও বলেন, ‘নতুন ব্যবস্থাগুলো চলতি অ্যাকাউন্টের ঘাটতির ওপরও প্রভাব ফেলবে। তবে পদক্ষেপটি একটি “জরুরি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা” এর অধীনে নেয়া হয়েছিল। ভোক্তাদের ওপর জ্বালানির দামের প্রভাব কীভাবে কমানো যায় সে বিষয়েও ভাবছে সরকার।’

পিটিআই-এর নেতৃত্বাধীন সাবেক সরকারের সমালোচনা করে আওরঙ্গজেব বলেন, ‘ইমরান খান সরকার মূল্যস্ফীতির তীব্র বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সন্ত্রাসের জন্য দায়ী। তিনি (ইমরান খান) অপরিশোধিত জ্বালানিতে ভর্তুকি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি অর্থনীতির সঙ্গে খেলছিলেন। আগত সরকারকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন।’

আগাম নির্বাচনের জন্য পিটিআই-এর ক্রমাগত আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে মন্ত্রী বলনে, সরকার এবং তার মিত্ররা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। কখন নির্বাচন করা হবে এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। আপনি যদি নির্বাচন করতে চাইতেন তাহলে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার আগেই তা করতেন।’

বর্তমান সরকারই কেবল বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে দেশকে থেকে বের করে আনতে পারে বলে দাবি করেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য কাজ করছেন। তবে এ ধরনের সিদ্ধান্তের জন্য সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

‘বর্তমান অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো সমাধান করার ক্ষমতা এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। আমদানি করা পণ্য নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপটি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে নেয়া হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে এ ইস্যুতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।’

সরকারের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন পিটিআই নেতা হাম্মাদ আজহার। তার ভাষ্য, নিষিদ্ধ হওয়া পণ্যগুলো মোট আমদানির ছোট একটা অংশ কেবল।

Non oil current account deficit stands at just under $1 bn. These measures to ban items will be inconsequential. pic.twitter.com/feknyr7ny6

— Hammad Azhar (@Hammad_Azhar) May 19, 2022

টুইটে তিনি বলেন, ‘ লাখ লাখ ব্যবসায়ী এবং দোকানদার এই পদক্ষেপে প্রভাবিত হবে। এটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও প্রভাব ফেলবে। এতে চোরাচালান বাড়ার আশঙ্কাও তীব্র।

এ বিভাগের আরো খবর