বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রুশ টিভিতে রাশিয়ার সমালোচনা কর্নেলের

  •    
  • ১৮ মে, ২০২২ ০৯:৪৩

রুশ অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল ও সামরিক বিশ্লেষক মিখাইল খোদারেনেক সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পরিস্থিতি (রাশিয়ার জন্য) স্পষ্টতই খারাপ হয়ে যাবে কারণ ইউক্রেন পশ্চিমাদের কাছে অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা পাবে এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী দশ লাখ মানুষকে অস্ত্র দিতে পারে।

ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া অভিযানের পর থেকেই রাশিয়ার মূলধারার গণমাধ্যমগুলোকে রুশ বাহিনীর যেকোনো অপারেশনাল ব্যার্থতার বিষয়ে নিশ্চুপ থাকতে দেখা গেছে এবং রুশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনেকটাই পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমের বিপরীত তথ্য প্রচার করেছে।

এবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে ক্রেমলিনের দাবিকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

ক্রেমলিন শুরু থেকেই বলে আসছে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান রাশিয়ার পরিকল্পনা মাফিকই হচ্ছে। এতদিন রুশ টেলিভিশন চ্যানেলকে এই বিষয়টি প্রচার করতে দেখা গেছে।

এই প্রথম রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলের ৬০ মিনিটের টকশো অনুষ্ঠান টুয়াইস ডেইলির প্রোগ্রামের অতিথি অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল ও সামরিক বিশ্লেষক মিখাইল খোদারেনেক রুশ টেলিভিশনে সচরাচর প্রচার করা তথ্যের বিপরীতে ভিন্ন কিছু উপস্থাপন করেছেন।

রুশ অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল ও সামরিক বিশ্লেষক মিখাইল খোদারেনেক

তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘পরিস্থিতি (রাশিয়ার জন্য) স্পষ্টতই খারাপ হয়ে যাবে কারণ ইউক্রেন পশ্চিমাদের কাছে অতিরিক্ত সামরিক সহায়তা পাবে এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী দশ লাখ মানুষকে অস্ত্র দিতে পারে।’

টকশোতে যুদ্ধক্ষেত্রে নৈতিক অবস্থানের বিষয়ে আলোকপাত করেছেন মিখাইল। তিনি ইউক্রেনীয় সেনাদের বিষয়ে বলেন, ‘তাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করার আকাঙ্খা অনেক বেশি বিদ্যমান। আর যুদ্ধক্ষেত্রের চূড়ান্ত বিজয় সেনাদের মনোবল দ্বারা নির্ধারিত হয়।’

রুশ এই সামরিক বিশ্লেষকের মতে, রাশিয়ার সামরিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিই সবচেয়ে বড় সমস্যা। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্ব থেকে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন এবং পুরো বিশ্ব আমাদের বিরুদ্ধে, যদিও আমরা একটা স্বীকার করতে চাই না। আমাদের এটি সমাধান করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যখন আমাদের বিরুদ্ধে ৪২টি দেশের জোট থাকে এবং যখন আমাদের সম্পদ, সামরিক ও প্রযুক্তি বিষয় সীমিত হয় তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে মনে করা যায় না।’

তার বক্তব্যের বিষয়ে স্টুডিওর অন্যান্য অতিথিরা চুপ ছিলেন। এমন কি প্রোগ্রামের উপস্থাপক ওলগা স্কাবেয়েভা, যাকে ক্রেমলিনপন্থি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সবসময় ক্রেমলিনের পক্ষে যিনি উচ্চকন্ঠ। অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেলের বক্তব্যের বিষয়ে তাকেও চুপ করে থাকতে দেখা যায়।

এদিকে যুদ্ধক্ষেত্রের গতি-প্রকৃতি মস্কোর পরিকল্পনা মাফিক হচ্ছে না এবং রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হতে পারে ইউক্রেন, এমনটাই দাবি করেন ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ।

ন্যাটোর মহাসচিব জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ

রোববার প্রতিবেদকদের সঙ্গে হওয়া এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে ইউক্রেন-রাশিয়ার সংঘাতের সবশেষ পরিস্থিতির আলোকে এই মন্তব্য করেন স্টলটেনবার্গ। ‘ইউক্রেনের প্রতি দৃঢ় সমর্থন, ন্যাটোর প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষাকে আরও শক্তিশালী করা এবং যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব’ ছিল বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু।

এ ছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে জোটের ভবিষ্যৎ অবস্থান কী হবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।

ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘রাশিয়ার পরিকল্পনামাফিক যুদ্ধ চলছে না। তারা কিয়েভ দখল করতে ব্যর্থ হয়েছে। খারকিভ থেকেও পিছু হটেছে। দোনবাসেও তারা হামলা স্থগিত করেছে। রাশিয়া তাদের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারছে না।’

তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন লড়াই চালিয়ে যাবে। সাহসিকতার সঙ্গে তাদের জন্মভূমি রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ন্যাটো আগের চেয়ে শক্তিশালী এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ দৃঢ়ভাবে একত্রিত।’

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেন ত্যাগ না করে রাজধানী কিয়েভে অবস্থান করেন এবং লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সেনা অভিযানের মধ্যেই ন্যাটোভুক্ত অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধান রাজধানী কিয়েভ সফর করেন।

যদিও চলতি মাসের শুরুর দিকে ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দাবি করেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান পরিকল্পনামাফিকই চলছে।

আমরা বিশ্ব থেকে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন এবং পুরো বিশ্ব আমাদের বিরুদ্ধে, যদিও আমরা একটা স্বীকার করতে চাই না। আমাদের এটি সমাধান করতে হবে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ অভিযান।

ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। এছাড়া ক্রেমলিনের দাবি, ইউক্রেনকে অবশ্যই নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের ভূমিকায় থাকতে হবে, অর্থ্যাৎ দেশটি কখনোই পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে পারবে না। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।

এ বিভাগের আরো খবর