নিউ ইর্য়কের বাফেলোর একটি সুপার মার্কেটে চালানো উদ্দেশমূলক হামলায় অগণিত কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার উদ্দেশ ছিল গ্রেপ্তার হওয়া শ্বেতাঙ্গ যুবকের।
হামলার এক দিন পরে স্থানীয় সময় রোববার বাফেলোর মেয়র বায়রন ব্রাউন এমনটি নিশ্চিত করেছেন।
মেয়র বায়রন ব্রাউন বলেন, ‘নির্বিচারে গুলি চালিয়ে যত বেশী পারা যায় তত কৃষ্ণাঙ্গের জীবন কেড়ে নেয়ার লক্ষ্য ছিল শ্বেতাঙ্গ যুবক পেটন গেনড্রনের।’
এর আগে, গত বছর জুনে তার আগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাইস্কুলে বন্দুক হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দেন এই যুবক। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তা জানতে পরে তাকে আটক করে। সংবাদমাধ্যম এপির খবরে বলা হয়, এর পর তার অবসাদ দূর করতে মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
নিউ ইয়র্কের এই হামলার পর এখন সমালোচনা করা হচ্ছে, নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারীতে থাকা সত্ত্বেও সে কীভাবে এমন হামলা চালিয়েছে।
হামলার দিন, বুকে পরা বিশেষ সুরক্ষা ভেস্ট ও সামরিক পোশাক পরে নিজ বাসা থেকে ৩২০ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সে।
টপস নামের ওই সুপার মার্কেটে ওই শ্বেতাঙ্গ যুবকের বন্দুক হামলায় নিহত হন ১০ জন। স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে চালানো ওই হামলায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। হতাহতের অধিকাংশই কৃষ্ণাঙ্গ।
স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত বাফেলো শহরের একটি সুপার মার্কেটে গাড়ি পার্কিয়ের জায়গায় এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে সামরিক পোশাক পরা ১৮ বছর বয়সী এক শ্বেতাঙ্গ যুবককে স্বয়ংক্রিয় (অ্যাসল্ট) রাইফেলসহ আটক করা হয়।
হতাহতদের মধ্যে রয়েছেন ১১ কৃষ্ণাঙ্গ ও দুই শ্বেতাঙ্গ। হতাহতদের বয়স ২০ থেকে ৮৬ এর মধ্যে।
টপস ফ্রেন্ডলি মার্কেটের এই হামলার পেছনে বর্ণবিদ্বেষী ও সহিংস চরমপন্থী মনোভাবকে দুষছেন স্থানীয় প্রশাসন।
দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের বাফেলো ফিল্ড অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্পেশাল এজেন্ট স্টিফেন বেলঙ্গিয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “এই গুলির ঘটনাকে ‘ঘৃণাজনিত অপরাধ এবং জাতিগতভাবে সহিংস চরমপন্থী মামলা’ হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে।’’
বাফেলোর পুলিশ কমিশনার জোসেফ গ্রামাগলিয়া বলেন, ‘ওই সন্দেহভাজনের হামলায় ৯ ক্রেতা এবং সুপার মার্কেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী ওই পুলিশকর্তা বন্দুকধারীকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি চালিয়েছিলেন। তবে সুরক্ষা বর্ম পরে থাকায় বেঁচে যায় বন্দুকধারী। গুলিতে তিনি নিহত হন।’
একটি দোকানের ভেতরে ওই নিরাপত্তারক্ষীর মুখোমুখি অবস্থানে এলে সন্দেহভাজন ব্যক্তি নিজের গলায় বন্দুক তাক করেন। এ সময় পুলিশ তাকে অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিলেন, পুলিশ কমিশনার যোগ করেন।
সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে বাফেলোর প্রায় ২০০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে কনক্লিন অঞ্চলের বাসিন্দা পেটন গেনড্রন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দুই কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এপিকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
কর্মকর্তাদের এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার অনুমতি দেয়া হয়নি এবং নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা তা করেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ পিয়েরে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই ঘটনা ও এর তদন্তের বিষয়ে নিয়মিত খবর নিচ্ছেন। এই ঘটনায় জো বাইডেন ফার্স্ট লেডিকে সঙ্গে নিয়ে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা ও তাদের প্রিয়জনদের জন্য প্রার্থনা করেছেন।’